জেলা পরিষদ নির্বাচনে সরকার সমর্থকরা জয়ী

নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: জেলা পরিষদের নিরুত্তাপ ভোট শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে। এ নির্বাচনে বেশিরভাগ জেলায় চেয়ারম্যান পদে সরকার সমর্থক প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। ১৩ জেলায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া সদস্য পদে অধিকাংশ সরকার সমর্থক প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন। পাশাপাশি বিদ্রোহী প্রার্থীও নির্বাচিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্য পদে। এছাড়া আগেই ২২ জেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীরা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। বগুড়া ও কুষ্টিয়ায় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে আদালতের আদেশে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে।

পার্বত্য তিন জেলা বাদে দেশে প্রথমবারের মতো ৬১ জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ করা হয় বুধবার। সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। শেষ হয় বেলা ২টায়। আইন অনুযায়ী এ নির্বাচনে জনগণের সরাসরি ভোটাধিকার নেই। মূলত স্থানীয় সরকার পরিষদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই এ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন। এ নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে ইসির পক্ষ থেকেও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়।

সকাল ৯টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। শেষ হয় বেলা ২টায়। রাজধানী ঢাকার চারটি কেন্দ্রে শুরুতে কোন ভোটার ভোট দিতে যাননি। প্রায় এক ঘণ্টার বেশি সময় পর ভোটার এলে ভোটগ্রহণ শুরু করা হয়। এছাড়া দেশের অধিকাংশ কেন্দ্রেই একজন করে ভোটার কেন্দ্রে এসে ভোট দিয়ে যান। আবার কোন কোন কেন্দ্রে একসঙ্গে আসার কারণে ভোটারদের লাইনও দেখা গেছে।

বুধবার দেশে প্রথমবারের মতো জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এজন্য প্রতিটি জেলায় ১৫টি ওয়ার্ডে ভাগ করে ভোটগ্রহণ করা হয়। সংশ্লিষ্ট ভোটাররা নিকটবর্তী কেন্দ্রে গিয়ে ভোট প্রদান করেন। অন্যান্য জেলার মতো ঢাকা জেলায় ১৫টি কেন্দ্রে ভোট দেন ঢাকা সিটি কর্পোরেশন প্রতিনিধিসহ অন্য প্রতিনিধি ভোটাররা। ভোটার সংখ্যা নির্ধারিত থাকায় ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের কোনরকম ঝামেলা পোহাতে হয়নি। ভোটাররাও নির্বিঘ্নে ভোট প্রদান করতে পেরেছেন। ভোট কেন্দ্র ছাড়া অন্য কোথাও ভোটের আমেজ ছিল না এ নির্বাচনে। ভোটার কম থাকায় দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়নি।

ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের আওতায় চারটি ভোট কেন্দ্রে ভোট দেন সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলররা। এ কারণে ঢাকার উত্তর সিটি কর্পোরেশন এবং দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে দুটি করে ভোট কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। উত্তরের মেয়র আনিসুল হক বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল এ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ভোট প্রদান করেন। সকাল সোয়া ১০টায় তিনিই প্রথম ওই কেন্দ্রে ভোট প্রদান করেন। ভোট প্রদান শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচন গণতন্ত্রের পক্ষে সরকারের জন্য ভাল পদক্ষেপ। এছাড়া রাজধানীর আজিমপুর গব: গার্লস স্কুল এ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ভোট প্রদান করেন মেয়র সাঈদ খোকন। বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে তিনি ভোট দিতে যান।

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী যারা

চাঁপাইনবাবগঞ্জে মইনুদ্দিন ম-ল, লক্ষ্মীপুরে সামছুল ইসলাম, নরসিংদীতে এ্যাড আসাদুজ্জামান, খুলনায় শেখ হারুনর রশিদ, চাঁদপুরে ওসমান গনি পাটোয়ারী, ঝিনাইদহে কনক কান্তি দাস, শরীয়তপুরে ছাবেদুর রহমান খোকার সিকদার, সিলেটে লুৎফুর রহমান, গোপালগঞ্জে চৌধুরী এমদাদুল হক, মানিকগঞ্জে এ্যাডভোকেট গোলাম মহিউদ্দিন, কক্সবাজারে মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী, মাগুরায় পঙ্কজ কুমার কুন্ডু, কুড়িগ্রামের আওয়ামী লীগের মোঃ জাফর আলী, পাবনায় রেজাউল রহিম লাল, রংপুরে ছাফিয়া খানম, বরিশালে মইদুল ইসলাম, বরগুনায় দোলোয়ার হোসেন, মৌলভীবাজারে আজিজুর রহমান, মাদারীপুরে মুক্তিযোদ্ধা মিরাজ উদ্দিন খান, পটুয়াখালীতে মোশাররফ হোসেন, রাজবাড়ীতে ফকির আব্দুর জব্বার, কুমিল্লায় আবু তাহের, নোয়াখালীতে ড. এবিএম জাফরউল্লা, ময়মনসিংহে অধ্যাপক ইউসুফ খান পাঠান বেসরকারীভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।

বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচিত যারা

জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী বিদ্রোহী প্রার্থীরা হলেন জামালপুরে ফারুক আহমেদ চৌধুরী, মেহেরপুরে গোলাম রসূল, রাজশাহীতে মোহাম্মদ আলী সরদার, শেরপুরে হুমায়ুন কবির রোমান, পিরোজপুরে মহিউদ্দিন মহারাজ, চুয়াডাঙ্গায় শামসুল আবেদীন খোকন, সাতক্ষীরায় নজরুল ইসলাম, পঞ্চগড়ে আমানুল্লাহ বাচ্চু, গাইবান্ধায় আতাউর রহমান, নীলফামারীতে জয়নাল আবেদীন, নড়াইলে সোহরাব বিশ্বাস, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শফিকুল আলম, সুনামগঞ্জে নুরুল হুদা মুকুট নির্বাচিত হয়েছেন।

বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতরা

নারায়ণঞ্জে আনোয়ার হোসেন, গাজীপুরে মোঃ আখতারুজ্জামান, ঠাকুরগাঁওয়ে সাদেক কোরাইশী, জয়পুরহাটে আরিফুর রহমান রকেট, নাটোরে সাজেদুর রহমান খাঁন, সিরাজগঞ্জে আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, যশোরে শাহ হাদিউজ্জামান, বাগেরহাটে শেখ কামরুজ্জামান টুকু, ঝালকাঠিতে সরদার শাহ আলম, ভোলায় আব্দুল মোমিন টুলু, নেত্রকোনায় প্রশান্ত কুমার রায়, মুন্সীগঞ্জে মোঃ মহিউদ্দিন, দিনাজপুরে আজিজুল ইমাম চৌধুরী, নওগাঁয় এ কে এম ফজলে রাব্বি, ফেনীতে আজিজ আহমেদ চৌধুরী, কিশোরগঞ্জে মোঃ জিল্লুর রহমান, ঢাকায় মোঃ মাহবুবুর রহমান, হবিগঞ্জে মোঃ মুশফিক হুসেন চৌধুরী, চট্টগ্রামে এম এ সালাম, টাঙ্গাইলে ফজলুর রহমান খান ফারুক ও ফরিদপুরে মোঃ লোকমান মৃধা।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ