কর্মসূচিতে বাধা দিলে বিএনপির ক্ষতি নেই: মোশাররফ
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ৫ জানুয়ারি বিএনপির কর্মসূচিতে সরকার বাধা দিলে বিএনপির কোনো ক্ষতি হবে না। এতে বরং সরকারই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বাধা দিলে নতুন করে সরকারের মুখোশ উন্মোচিত হবে।
আজ শনিবার সকালে কৃষক দলের ৩৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের মোশাররফ এসব কথা বলেন। এর আগে তিনি কৃষক দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, গণতন্ত্রের প্রতি ন্যূনতম শ্রদ্ধাবোধ থাকলে সরকার বিএনপির কর্মসূচি নিয়ে কোনো টালবাহানা করবে না।
আগামী ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তৃতীয় বর্ষপূর্তি হচ্ছে। ওই নির্বাচন বর্জন করে সংসদের বাইরে আছে বিএনপি। দিনটিকে বিএনপি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করে। অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ দিনটি পালন করে ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ হিসেবে। দুই দলই দিনটিকে সামনে রেখে কর্মসূচি দিয়েছে। আওয়ামী লীগ ইতিমধ্যে বলেছে, ৫ জানুয়ারি জনগণ বিএনপিকে মাঠে নামতে দেবে না। বিএনপি বলেছে, তাদের কর্মসূচি হবেই।
বিএনপি শেষ পর্যন্ত কর্মসূচি পালন করতে পারবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আজ সকালে খন্দকার মোশাররফ সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় এবং ৫ জানুয়ারিতে জনগণ ভোট দিতে পারেনি, এটি গণতন্ত্রের জন্য কলঙ্কিত দিন। বিনা ভোটে নির্বাচিত হওয়ায় তারা এই দিনটি নিয়ে ভীত। তারা বলেছে, বিএনপিকে রাস্তায় নামতে দেবে না। একটি স্বৈরাচারী, ফ্যাসিস্ট সরকারই এ রকম কথা বলতে পারে। ৫ জানুয়ারি বিএনপিকে কর্মসূচি করতে বাধা দিলে জনগণ সেটি বিচার করবে।
মোশাররফ অভিযোগ করেন, সরকার গুম-খুনসহ নানা ধরনের জনগণের স্বার্থবিরোধী কাজ করছে। সরকারের এই ধরনের কাজকর্মে জনগণ হতাশ। বিএনপি মানুষের ভোটের অধিকার, গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেবে। এ জন্য বিএনপি আন্দোলন করছে। মানুষ যাতে ভোটাধিকার ফিরে পায়, সে পরিবেশ সৃষ্টির জন্য, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বিএনপি একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন ও তা শক্তিশালী করার প্রস্তাব দিয়েছে। পাশাপাশি নির্বাচনকালীন একটি নিরপেক্ষ সহায়ক সরকারের কথাও বলেছে।
দুপুরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, গণতন্ত্রের প্রতি ন্যূনতম শ্রদ্ধাবোধ থাকলে সরকার বিএনপির কর্মসূচি নিয়ে কোনো টালবাহানা করবে না। ৫ জানুয়ারি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ উপলক্ষে বিএনপি যে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, ঢাকাসহ সারা দেশে সে কর্মসূচি পালনের ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
রিজভী দাবি করেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ছিল ভোটারবিহীন বিতর্কিত একতরফা নির্বাচন। ÿক্ষমতায় টিকে থাকতে সংবিধান সংশোধন করে দলীয় সরকারের অধীনে একটি একতরফা নির্বাচন করেছে আওয়ামী লীগ, যা ছিল একটি দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক নির্লজ্জ তামাশা।
রিজভী আরও দাবি করেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতারাও সে সময় বলেছিলেন, নির্বাচনটি ছিল নিয়ম রক্ষার নির্বাচন। কিন্তু সেই প্রহসনের নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পর আওয়ামী নেতারা সে কথা ভুলে গিয়ে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখলেন।’
রিজভী বলেন, নতুন বছরে মানুষের আশা, সরকারি প্রভাবমুক্ত নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের তত্ত্বাবধানে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে।