ছাত্রলীগের ৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: বাংলাদেশের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ও সংগ্রামে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দানকারী ঐতিহ্যবাহী ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ।
বাংলা, বাঙালির স্বাধীকার অর্জনের লক্ষ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনায় ১৯৪৮ সালের ৪টা জানুয়ারি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের জন্ম হয়।
উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ ও প্রাচীন ছাত্র সংগঠন- বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গৌরব, ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও সাফল্যের ৬৯তম বার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
সংগঠনের দপ্তর সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন শাহাজাদা বাসসকে বলেন, ছাত্রলীগের ৬৯ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী বর্ণাঢ্যভাবে পালন করা হবে। দিবসটি উপলক্ষে সকাল সাড়ে ৬ টায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন এবং সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও সংগঠনের পতাকা উত্তোলন, সকাল ৮ টা ১ মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে কেক কাটা, ১০ টায় বর্ণাঢ্য র্যালী, ৫ জানুয়ারি স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি, ৬ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে দুঃস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ ও টি এস সি অডিটোরিয়ামে বিকাল ৩ টায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং ৮ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হবে।
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ছাত্র সংগঠনটি প্রতিটি গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে বিজয় ছিনিয়ে এনেছে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তার দীর্ঘ রাজনৈতিক পরিক্রমায় ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৫৪’র প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের বিজয়, ৫৮’র আইয়ুববিরোধী আন্দোলন, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬’র ৬ দফার পক্ষে গণঅংশগ্রহণের মাধ্যমে মুক্তির সনদ হিসেবে এই দাবিকে প্রতিষ্ঠা করে। এরপর ৬৯’র গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে কারাগার থেকে মুক্ত করে আনা, ৭০’র নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ জয়লাভ এবং ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে পরাধীন বাংলায় লাল সবুজের পতাকার বিজয় ছিনিয়ে আনতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মহান স্বাধীনতা অর্জনের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে অংশ নেয় ছাত্রলীগ। ১৯৭৫’র ১৫ আগস্ট জাতির পিতা সপরিবারে হত্যার পর ছিনতাই হয়ে যায় স্বাধীনতার চেতনা ও গণতান্ত্রিক ধারা। ১৯৮১ সালের ১৭ মে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা (বর্তমান প্রধানমন্ত্রী) দেশে ফিরে স্বাধীনতার চেতনা পূর্ণ প্রতিষ্ঠা এবং গণতান্ত্রিক ধারা পুনরুদ্ধারে আন্দোলনের সূচনা করেন। ছাত্রলীগ ৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে অনন্য ভূমিকা পালন করে।
১৯৯৬ সালে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি সরকার গঠিত হলে সারা দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে শিক্ষার অনুকুল পরিবেশ তৈরি হয়।
কিন্তু ২০০১ সালে ১ অক্টোবর বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে সন্ত্রাসের মাধ্যমে রাষ্ট্রযন্ত্রকে অপব্যবহার করে। এর বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা সূচিত ধারাবাহিক সংগ্রামে বিরোত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ছাত্রলীগ।
এরপর ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর বাংলার জনগণের গণরায় নিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ, ক্ষুধা- দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রত্যয়ে শেখ হাসিনা পুনরায় দেশ ও জনগনের সেবার দায়িত্ব লাভ করেন। এ সময় শেখ হাসিনা ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কর্মসূচি বাস্তবায়ন এবং ছাত্রসমাজকে দক্ষ মানব সম্পদে রূপান্তরিত করে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষার বিকাশে নিজেদের নিয়োজিত করে ছাত্রলীগ।
ওই নির্বাচনের অঙ্গীকার অনুযায়ী শেখ হাসিনা তরুণ প্রজন্ম ও ছাত্র সমাজের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়া এবং জাতিকে কলঙ্ক ও দায়মুক্ত করার লক্ষে স্বাধীনতার ৪২ বছর পরে মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকার্য সম্পন্ন করতে যে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তা বাস্তবায়ন ও নিষ্ঠার সঙ্গে সহযোগিতা করছে ছাত্রলীগ।
এদিকে ২০১৪ সনের ৫ জানুয়ারি দেশের গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখার জন্য নির্বাচন যখন বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা প্রতিহত করার অপচেষ্টা চালিয়েছিল তখনই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দেশের সাধারণ জনগণ তথা ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে ভ্যানগার্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করে।
দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিবির-ছাত্রদলের সন্ত্রাসীরা যখন বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্মকান্ডে লিপ্ত, তখন ছাত্রলীগ দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে অস্ত্রবাজমুক্ত করার লক্ষ্যে “ক্লিন ক্যাম্পাস এন্ড সেভ ক্যাম্পাস’ কর্মসূচি পালন করে। ইতিহাসের ঐতিহ্যবাহী সংগঠন ছাত্রলীগ বর্তমানে দেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের ধারা আরো গতিশীল ও সমৃদ্ধ করপশ ছাত্রসমাজকে সঙ্গে নিয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম অব্যহত রেখেছে।