নবগঙ্গা নদী খননে ৫০ কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাব অনুমোদনের অপেক্ষায়

নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে মাগুরার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মৃতপ্রায় নবগঙ্গা নদী খননসহ প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য প্রায় ৫০ কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাব অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
প্রকল্পটি অনুমোদন হলে খুব দ্রুতই নদীর পানান্দুয়ালী ব্রিজের অংশ থেকে পূর্বদিকে ১১ কিলোমিটার এলাকা খননের কাজ শুরু হবে। সেই সাথে নদীর বিভিন্ন স্থানে স্থানীয় জনসাধারণের গোসলের জন্য ঘাট নির্মাণ ও পানি নিয়ন্ত্রণে রেগুলেটর নির্মাণ করা হবে। প্রস্তাবটি পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে দ্রুতই অনুমোদন হবে বলে আশা করছে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড।
মাগুরা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলার মাথাভাঙ্গা এলাকা থেকে নবগঙ্গা নদীর উৎপত্তি। নদীটি মাগুরা শ্রীপুর উপজেলার কুমার নদ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে মাগুরা পৌরসভার পারনান্দুলী এলাকায় এসে নবগঙ্গা নাম ধারণ করেছে। এ নদীতে ভারতের উজান থেকে পানি প্রবাহ কমে যাওয়া, নদীর বিভিন্ন অংশে বাঁধ ও ব্রিজ নির্মাণ, পলি পড়ে নদী ভরাট হয়ে যাওয়াসহ নানা কারণে শুকিয়ে যাচ্ছে। নাব্যতা হারানোর কারণে নদীর বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে জেগে উঠেছে চর। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় ‘জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে’ নদীটির ১১ কিলোমিটার এলাকা খননে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ৫০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়।
প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় নদীর তলদেশে উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় মাগুরা জেলার সদর উপজেলাধীন বড়বিলা বিল, কৈবিলা বিল, পুটুলিয়া বিল, রূপদাহ বিল এলাকার জমির জলাবদ্ধতা দূরীকরণের লক্ষ্যে নবগঙ্গা নদী পুনঃখনন করা অত্যন্ত জরুরী। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নদী তীরবর্তী এলাকার বন্যার পানি নিষ্কাশন হওয়ার পাশাপাশি জমির ফসল রক্ষা, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, নদীর নাব্যতা বৃদ্ধি, বন্যাকালীন সময়ে এলাকাবাসীদের নিজ গৃহে অবস্থান করা ও দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি সফল হওয়াসহ প্রায় ৪ হাজার হেক্টর জমিতে ১২ হাজার মেট্রিক টন অতিরিক্ত খাদ্যশস্য উৎপাদন সম্ভব হবে। ফলে এলাকার আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি ঘটবে বলে প্রকল্প প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া নদীতে মাছচাষ বৃদ্ধি, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাসহ উদ্ভিদ ও প্রাণীকূলের নিরাপদ জীবনযাত্রা নিশ্চিত হবার পাশাপাশি নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ শুষ্ক মৌসুমে নানা কাজে নদীর পানি ব্যবহার করতে পারবে। এ অবস্থায় নদীটির ১১ কিলোমিটার এলাকা খননের এ প্রকল্প প্রস্তাবটি অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে।
মাগুরা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ বলেন, পরিবর্তিত জলবায়ুর প্রভাবে পলি পড়ে অনেকাংশেই ভরাট হয়ে যাওয়া নবগঙ্গা নদী সংস্কারের প্রস্তাব খুব দ্রুতই অনুমোদন হবে বলে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, বর্তমানে প্রকল্প প্রস্তাব পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে ১১ কিলোমিটার নদী খননসহ অন্যান্য সংস্কার কাজ সম্পন্ন হলে জীববৈচিত্র, প্রাকৃতিক ভারসাম্য এবং পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি কৃষি জমিতে সেচ কার্যক্রম চালানোসহ মানুষের জীবনমানের উন্নয়নে অবদান রাখবে। এর পাশাপাশি মাগুরার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদী সংলগ্ন খালসহ বিভিন্ন জলাশয়ে পানি প্রবাহ বাড়বে বলে তিনি মনে করেন ।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ