সংবাদ সম্মেলন থেকে একপর্যায়ে উঠে গেলেন মন্ত্রী
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: ২০১৬ সালের অর্জন নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু সেই সংবাদ সম্মেলনে অভিবাসন খরচ কমানোসংক্রান্ত সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তর পর্বের একপর্যায়ে সংবাদ সম্মেলনস্থল থেকে উঠে চলে যান এ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী নুরুল ইসলাম।
আজ রোববার দুপুরে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে এ ঘটনা ঘটে। সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকেরা মন্ত্রীর কাছে জানতে চান, সৌদি আরবে যাওয়ার জন্য সরকার ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করলেও বাস্তবে তিন থেকে আট লাখ পর্যন্ত লাগছে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় কী করছে? উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এমন কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
অভিযোগ উঠেছে, দুই দেশের মধ্যস্বত্বভোগী ও মন্ত্রণালয়কেন্দ্রিক একটি চক্রের ঘুষ-বাণিজ্যের কারণেই এমন খরচ বাড়ছে। এ বিষয়ে কী বলবেন জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘এমন কোনো চক্রের কথা আমার জানা নেই। আর কেউ লিখিত অভিযোগও করেনি।’
শুধু সৌদি আরব নয়, বাংলাদেশ থেকে যেকোনো দেশে যেতেই দুই থেকে ছয় লাখ টাকাও লাগে। মন্ত্রণালয়ের গঠিত টাস্কফোর্স বিভিন্ন সময় এমন প্রতিবেদন পেয়েছে। তারপরেও সরকার কেন অভিযোগ অস্বীকার করছে, কেনই বা কাগজে ১৭ হাজার বা ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা লিখছে? এই প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। আমাদের তথ্য অনুযায়ী ১ লাখ ৫৬ হাজার টাকায় লোক যাচ্ছে।’
১ লাখ ৬৫ হাজার টাকায় কোন প্রতিষ্ঠান লোক পাঠাচ্ছে, জানতে চাইলে মন্ত্রী এ পর্যায়ে আর কোনো উত্তর না দিয়েই সংবাদ সম্মেলনস্থল থেকে চলে যান।
পরে প্রবাসীকল্যাণসচিব বেগম শামছুন নাহারের কাছেও জানতে চাওয়া হয়, কারা সৌদি আরবে ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকায় লোক পাঠাচ্ছে? সচিব বলেন, ‘আমরা তো বলব সবাই এই টাকায় পাঠাচ্ছে। তবে এটা ঠিক দুই প্রান্তেই মধ্যস্বত্বভোগী আছে। তাদের কারণেই খরচ বাড়ছে। আমরা তাদের তালিকা করছি।’
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ থেকে বিদেশে যাওয়ার খরচ ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কাসহ যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি।
এর আগে ২০১৬ সালের অর্জন নিয়ে লিখিত বক্তব্যে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর বিদেশে কর্মী প্রেরণের সংখ্যা অনেক বৃদ্ধিসহ কর্মীদের কল্যাণে নানামুখী কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। ২০১৬ সালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ৭ লাখ ৫৭ হাজার ৭৩১ জন কর্মীর কর্মসংস্থান হয়েছে। ২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৬ সালে বৃদ্ধির হার ৩৬ দশমিক ৩১ শতাংশ।’ মন্ত্রী বলেন, ‘২০১৬ সালে ওমানে সর্বোচ্চসংখ্যক কর্মী গমন করেছে। এরপর সৌদি আরবে গেছেন। তবে প্রচলিত শ্রমবাজারের পাশাপাশি নতুন নতুন বাজার অনুসন্ধান করে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে রাশিয়ায়, অস্ট্রেলিয়া, থাইল্যান্ড ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।’
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত সচিব জাবেদ আহমেদ, জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) মহাপরিচালক সেলিম রেজা, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক গাজী মোহাম্মদ জুলহাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।