সন্ত্রাসের পথ থেকে ছাত্রদের দূরে রাখতে শিক্ষকদের ভূমিকার ওপর গুরুত্ব আরোপ
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ সন্ত্রাসের পথ থেকে ছাত্রদের দূরে রাখতে তাদের মধ্যে নৈতিকতা উন্নয়নে শিক্ষকদের ভূমিকার ওপর আজ গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
ছাত্ররা যাতে কোন অনৈতিক তৎপরতায় জড়িত না হয় সেজন্য ভাল মানুষ হিসেবে তাদেরকে গড়ে তুলতে আত্মনিয়োগ করার জন্য তিনি শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানান।
জঙ্গীমুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি শীর্ষক শিক্ষকদের এক সমাবেশে বক্তৃতাকালে শিক্ষামন্ত্রী এ কথা বলেন।
চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ গার্লস কলেজ ক্যাম্পাসে চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড এই সমাবেশের আয়োজন করে।
নাহিদ বলেন, ‘আপনারা (শিক্ষক) ছাত্রদের কাছে সবচেয়ে শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব। আপনাদের এটা নিশ্চিত করতে হবে যে, আপনারা যেসব ছাত্র তৈরি করছেন তাদের যেন নৈতিক মান বজায় থাকে। তারা যেন মানবতার প্রতি সহানুভূতিশীল চিন্তাভাবনা নিয়ে বেড়ে ওঠে।’
ছাত্ররা যাতে লেখাপড়ার প্রতি মনোযোগী হয় শ্রেণীকক্ষে সেরকম পরিবেশ তৈরি করতে তিনি শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি স্কুলে লেখাপড়ার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক ও অন্যান্য অনুষ্ঠানের আয়োজন বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। ‘ছাত্ররা যাতে ভুল পথে না যায়, সেজন্য তাদের সঠিক শিক্ষ’া দেয়ার ওপরও গুরুত্ব আরোপ করেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘কেবল বিদ্যমান আইন দিয়ে জঙ্গীবাদ নির্মূল করা যাবে না। আমাদের এজন্য দরকার একটি সামাজিক আন্দোলন ও প্রতিরোধ। আমাদের মন্ত্রণালয় সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য কাজ করছে।’
তিনি বলেন, ‘স্থানীয় স্কুল-কলেজগুলোর কর্মকর্তাদের পাশাপাশি শিক্ষক, অভিভাবক, গণ্যমান্য ব্যক্তি, সাংস্কৃতিক কর্মী ও প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যবৃন্দ রয়েছেন। তাই সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টির জন্য আমি সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তাই এ দেশকে আমরা কখনও সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের স্থায়ী ঘাঁটি হতে দেবো না।’
নাহিদ বলেন, যারা যুবকদেরকে জঙ্গীবাদের দিকে নিয়ে যাচ্ছে তারা ইসলামের নামে তাদের ব্রেনওয়াশ করছে। তারা যুবকদেরকে বলছে ‘জিহাদ’-এ মারা গেলে তারা সরাসরি বেহেশতে যাবে এবং সেখানে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাবে, যা এ দুনিয়ায় তারা পাচ্ছে না।
নূরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘হলি আর্টিজান ও সোলাকিয়ার ঘটনায় নিহত জঙ্গীদের লাশ তাদের পিতা-মাতা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন, যখন পিতা-মাতা তাদেরকে গ্রহণ করেন না, তখন আল্লাহ তাদেরকে কিভাবে বেহেশতে নেবেন।’ তিনি বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। এটা কখনও হত্যাকা- বা ধ্বংসযজ্ঞকে প্রশ্রয় দেয় না।
তিনি বলেন, সরকার দেশে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করছে। ‘সনাতন পদ্ধতির শিক্ষা দিয়ে সামনে এগুনো সম্ভব নয়। আমাদেরকে বিশ্বমানের শিক্ষা অর্জন দরকার।’
তিনি বলেন, ‘মেধাবি ছাত্ররা দেশের সম্পদ। তারা তাদের মেধা দিয়ে ভবিষ্যতে দেশকে উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাওয়ার নেতৃত্ব দেবে।’
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর শাহেদা ইসলাম, শিক্ষা সচিব এম সোহরাব হোসেন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার রুহুল আমিন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ড. এস এম ওয়াহিদুজ্জামান, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক শামসুল আরেফিন বক্তৃতা করেন।