আলামত হিসেবে কল্যাণের গাড়ি জব্দ
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: গাড়িধাক্কায় প্রথম আলোর প্রধান আলোকচিত্র সাংবাদিক জিয়া ইসলাম গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় করা মামলার আলামত হিসেবে আসামি কল্যাণ কোরাইয়ার গাড়ি জব্দ করা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে রাজধানীর কলাবাগান থানা-পুলিশ এটি জব্দ করে।
কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াসির আরাফাত খান, পরিদর্শক (তদন্ত) সমীর চন্দ্র সূত্রধর, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ওমর ফারুক খানসহ পুলিশের একটি দল তেজগাঁওয়ের মনিপুরী পাড়ায় কল্যাণের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাঁর গাড়ি জব্দ করেন। কলাবাগান থানার ওসি এ তথ্য জানিয়েছেন।
কলাবাগান থানা-পুলিশ সূত্র জানায়, দুর্ঘটনাস্থলের আশপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে গাড়ির যে বর্ণনা পাওয়া গিয়েছিল, সে হিসেবে ধারণা করা হচ্ছে এটিই সেই গাড়ি। এ কারণে মামলার আলামত হিসেবে কল্যাণের গাড়ি জব্দ করা হয়েছে।
৯ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১১টার দিকে বসুন্ধরা শপিংমলের সামনের সড়কে একটি গাড়ি জিয়ার মোটরসাইকেলকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। দুর্ঘটনার পর জিয়া অচেতন অবস্থায় রাস্তায় পড়ে ছিলেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত কয়েকজন সাংবাদিক তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সংকটাপন্ন অবস্থা দেখে হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তাঁকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করেন। চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর একটি পা ভেঙে গেছে। তবে সবচেয়ে গুরুতর হলো মাথার আঘাত।
১০ জানুয়ারি বেলা দুইটার দিকে জিয়া ইসলামকে অ্যাম্বুলেন্সে করে অ্যাপোলো হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে প্রায় চার ঘণ্টা ধরে তাঁর মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করা হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচারের পর ১১ জানুয়ারি দুপুরের দিকে তাঁর একটি চোখ সাড়া দিতে শুরু করেছে। শরীরের তাপমাত্রা ও রক্তচাপ স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। তবে তাঁর এখনো জ্ঞান ফেরেনি। তাঁর শারীরিক অবস্থার আরও উন্নতি হলে অন্যান্য চিকিৎসা শুরু হবে। ইতিমধ্যে হাসপাতালটির চক্ষু, হাড়, চর্ম ও চোয়াল বিশেষজ্ঞরা তাঁকে দেখে গেছেন।
এ ঘটনায় ১০ জানুয়ারি কলাবাগান থানায় মামলা করেন প্রথম আলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থাপক মেজর (অব.) সাজ্জাদুল কবীর। এই মামলায় কল্যাণ কোরাইয়া নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কল্যাণ বিজ্ঞাপনের মডেল ও অভিনয় পেশার সঙ্গে যুক্ত। এই মামলায় ১১ জানুয়ারি কল্যাণ কোরাইয়ার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। একই সঙ্গে আদালত তাঁকে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রায় দুই দশকের সাংবাদিকতা জীবনে বহুবার হামলা ও দুর্ঘটনায় শিকার হয়েছেন জিয়া ইসলাম। এর মধ্যে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলার ঘটনাতেও তিনি আহত হয়েছিলেন। আহত হলেও তিনি ক্যামেরা ছাড়েননি। ২১ আগস্ট হামলার বহুল প্রচারিত ছবিগুলোর বেশির ভাগই জিয়া ইসলামের তোলা।