দাবি মানুন, আমরাও মেনে নেব
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ নির্দলীয় সরকারের দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেছেন, এতে ক্ষমতাসীনরা জিতলে তারা সেই ফলাফল মেনে নেবেন।
বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের যৌথ উদ্যোগে এক ইফতার মাহফিলপূর্ব সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, “সরকারকে বলব, আলোচনা করে নির্দলীয় সরকার ফিরিয়ে আনুন। ওই নির্বাচনে আপনারা জিতলে আমরা স্বাগত জানাব।”
নির্দলীয় সরকারের দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, “ভোলা-ব্রাক্ষণবাড়ীয়া উপনির্বাচনে ভোট কারচুপি ও সন্ত্রাস হয়েছে। সর্বশেষ কিশোরগঞ্জেও একই কাজ তারা করেছে। এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি, হবে না।”
সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “আমরা শান্তি চাই। গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে চাই। তাই সরকারকে বলব, আপনারা অতীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করেছিলেন। সেই দাবি আমরা মেনে নিয়েছিলাম। এখন আমাদের দাবি মেনে নিয়ে নির্দলীয় সরকার ফিরিয়ে আনুন।”
আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও বর্তমান সরকারের সব অপকর্মের বিচার করা হবে বলে জানান বিএনপি চেয়ারপার্সন।
বর্তমান সরকারের আমলে সাংবাদিক নির্যাতনের সমালোচনা করে খালেদা জিয়া বলেন, “এই সরকারের আমলে ১৮ জন সাংবাদিক হত্যা করা হয়েছে। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার এখনো কোনো বিচার হয়নি।”
সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি তথ্য সংগ্রহ করার জন্য সাগর-রুনিকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
খালেদা বলেন, “বাসায় গিয়ে তাদের নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। কোনো জিনিসপত্র চুরি হয়নি। কেবল ল্যাপটপটা নিয়ে গেছে। কারণ ওই ল্যাপটপটিতে সরকারের দুর্নীতির তথ্য-প্রমাণ ছিলো।”
তিনি অভিযোগ করেন, সরকার আজীবন ক্ষমতায় থাকার জন্য একটা নীল নকশা করছে। পাঁচ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের পর তারা বুঝে গেছে,সরকার আর ক্ষমতায় আসতে পারবে না। তাই তারা দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে চায় না।”
বিএফইউজে‘র সভাপতি রুহুল আমিন গাজী‘র সভাপতিত্বে ইফতার পূর্ব আলোচনায় শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের মহাসচিব শওকত মাহমুদ।
মঞ্চে বিরোধী দলীয় নেতার সঙ্গে রুহুল আমিন গাজী, শওকত মাহমুদ ছাড়াও জাতীয় দৈনিকের সম্পাদকদের মধ্যে মাহবুবুল আলম, রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, আবুল আসাদ, এ এম এম বাহাউদ্দিন, আলমগীর মহিউদ্দিন, সাংবাদিক আমানুল্লাহ কবির, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবদুস শহিদ, সাধারণ সম্পাদক বারেক হোসাইন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ প্রমুখ একই টেবিলে বসে ইফতার করেন।
ইফতার আয়োজনে শেখ হাসিনার তথ্য বিষয়ক উপদেষ্টা আওয়ামী লীগ সমর্থিত ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ইকবাল সোবহান চৌধুরী, সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ওমর ফারুক ও সাধারণ সম্পাদক শাবান মাহমুদও অংশ নেন।
মূল টেবিলে শিক্ষাবিদ অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমেদ, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক নাজির আহমেদ, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ নেজামী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, আ স ম হান্নান শাহ, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সহসভাপতি সাদেক হোসেন খোকা, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব হোসেন, প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান, যুগ্ম মহাসচিব বরকত উল্লাহ বুলু, সুপ্রিম কোর্টের আইজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন প্রমুখ নেতারা ইফতার করেন।
এছাড়া সাংবাদিকদের মধ্যে এম এ আজিজ, এলাহি নেওয়াজ খান, আল মুজাহিদী, মাহফুজউল্লাহ, আবদুল হাই শিকদার, মাহমুদ শফিক, আবু সালেহ, সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন, খায়রুল আনোয়ার, সরদার ফরিদ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি শাহেদ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, শিক্ষাবিদ আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, ইসলামিক পার্টির আবদুল মোবিন, লেবার পাটির মুস্তাফিজুর রহমান ইরান, খেলাফত মজলিশের অধ্যাপক আহমেদ আবদুল কাদের, জাগপা‘র খন্দকার লুৎফর রহমান, শিক্ষক-কর্মচারি ঐক্যজোটের প্রধান অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, মহিলা দলের নুরে আরা সাফা, শিরিন সুলতানা, রোজী আফসারী, সাহানা আখতার সানু, আকবর সিরাজী প্রমুখ ইফতারে অংশ নেন।