খুনি সন্দেহে গ্রেপ্তার দুই শিশুকে হাজির করতে নির্দেশ

নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি,ঢাকা: অজ্ঞাত-পরিচয় এক শিশুর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় খুনি সন্দেহে গ্রেপ্তার দুই শিশুকে ২৯ জানুয়ারি আদালতে হাজির করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারকে এ নির্দেশ দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে শিশু ‘ক’ বর্তমানে জা​মিনে আছে।

এ ঘটনায় করা এক রুলের ওপর শুনানি নিয়ে আজ রোববার বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক এবং বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন রিটকারী আইনজীবী আবদুল হালিম।

পুলিশ অজ্ঞাতপরিচয় শিশুটির লাশ উদ্ধার করে গত ১ অক্টোবর, রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের কালুনগর খাল থেকে। বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম সেটা দাফন করে। এদিকে ২৯ সেপ্টেম্বর লালবাগ এলাকা থেকে আলিফ নামের নয় বছর বয়সী এক শিশু নিখোঁজ হয়েছে বলে স্থানীয় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন তার বাবা উজ্জ্বল ভূঁইয়া। ৮ অক্টোবর তিনি কামরাঙ্গীরচর থানায় গিয়ে অজ্ঞাতপরিচয় লাশের ছবি দেখেন, কিন্তু সেটাকে নিজের ছেলের বলে শনাক্ত করেন না।

তবে আলিফের পরিবার বলছে, ১১ অক্টোবর সকালে তারা ছেলের একজন খেলার সঙ্গীকে বাসায় ধরে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে। সে (শিশু ‘ক’) আরেক বন্ধুর (শিশু ‘খ’) সঙ্গে মিলে আলিফকে হত্যার কথা স্বীকার করে। সাংবাদিকতার নীতিমালা ও শিশু আইন মেনে প্রতিবেদনে তাদের নাম-পরিচয় দেওয়া হচ্ছে না।

১১ অক্টোবর রাত ১০টার দিকে আলিফের বাবা বাদী হয়ে কামরাঙ্গীরচর থানায় শিশু দুটির নামে খুনের মামলা করেন। এজাহারে তিনি লেখেন, অজ্ঞাতপরিচয় লাশটি তাঁর ছেলের। শিশু ‘ক’ ও শিশু ‘খ’ মিলে আলিফকে গলা টিপে হত্যা করে কালুনগর খালের পানিতে ডুবিয়ে দিয়েছে। আলিফের বাবা তখনই শিশু ‘ক’কে পুলিশে সোপর্দ করেন। পুলিশ রাত দেড়টার দিকে শিশু ‘খ’কে গ্রেপ্তার করে।

১২ অক্টোবর সকালে শিশু দুটিকে খালপাড়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। পরে ঢাকার মহানগর হাকিম লস্কর সোহেল রানা তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন। তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আজহার হোসেন শিশু দুটির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়ার আবেদনে লেখেন, তারা আলিফের বন্ধু ছিল। একসঙ্গে খেলাধুলা ও গোসল করত। ঘটনার দিন খালে গোসল করতে নামলে আলিফের সঙ্গে তাদের ঝগড়া বাধে। তারা আলিফকে গলা টিপে মেরে লাশ পানিতে রেখে চলে যায়।

পরে বিচারিক হাকিম স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নিয়ে তাদের টঙ্গীর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠান।

শিশু আইন, ২০১৩ অনুযায়ী, নয় বছরের কম বয়সী কোনো শিশুকে গ্রেপ্তার কিংবা আটক করা যাবে না (ধারা ৪৪/১)। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলছেন, এই বয়সী শিশুর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও নেওয়া যাবে না।

মামলার এজাহারে শিশু দুটির বয়স বলা হয়েছে ১২ বছর। কিন্তু অভিভাবকেরা বলছেন, তাদের বয়স নয় বছরের কম।

২৯ নভেম্বর হাইকোর্ট ‘ক’ শিশুটির জামিন মঞ্জুর করেন । একই সঙ্গে শিশু দুটির বয়স নির্ধারণ সংক্রান্ত প্রতিবেদন ৪ জানুয়ারির মধ্যে জমা দিতে বলা হয়। সে নির্দেশ অনুযায়ী পুলিশ প্রতিবেদন জমা দেয়।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ