লাখ টাকা খাটিয়ে লাটে ব্যবসা-বাণিজ্য

নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: মৌচাক মার্কেটের সামনে বেশ কিছু ব্যানার। সেখানে লেখা মূল্যছাড়। ভেতরে ঢুকে দোকানদারদের জিজ্ঞাসা করতেই তাঁরা জানালেন, উড়ালসড়কের কাজ চালুর পর থেকে রাস্তা খারাপ হয়ে গেছে। এ ছাড়া রাস্তায় ধুলা আর নোংরা পানির কারণে ক্রেতারাও আগের মতো এই মার্কেটে আসেন না। এ জন্য বিভিন্ন দোকানদার মূল্যছাড়ে পণ্য বিক্রি করছেন।

ক্যামেলিয়া শাড়ির দোকানের বিক্রেতা সূর্য মিয়া বলেন, রাস্তা খারাপ হওয়ায় এখানে আগের মতো লোকজন আসে না। তাই ব্যবসা-বাণিজ্যের অবস্থা ভালো না। মূল্যছাড় দেওয়ার পরও তাঁরা আশানুরূপ ক্রেতা পাচ্ছেন না বলে জানান তিনি।

মৌচাক মার্কেটের বণিক সমিতির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সাইদুর রহমান বলেন, ‘বেচাকেনা কিছু নাই। ভয়ানক খারাপ অবস্থা। তাই আমরা অনেকে ডিসকাউন্ট দিচ্ছি, তাতেও কাজ হচ্ছে না।’

মালিবাগ নিউ সার্কুলার রোডের দোকানদার প্যারেন্টস গ্যালারির মালিক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, দুই বছর আগে এই সড়কের খারাপ অবস্থা দেখে দোকান ছেড়ে দিয়ে মালয়েশিয়ায় যাই। ফিরে আসার পরও দেখি আগের মতোই অবস্থা। কাদা, পানি, ধুলা আর এখানে টেকা দায়। বাধ্য হয়ে দোকান খুলেছি আবার। কিন্তু ক্রেতা আসে না। তাঁর দোকানে শিশুদের স্কুল ব্যাগ ও খেলনা পাওয়া যায়। দোকানে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে দেখা গেল ক্রেতা আসছেন না। মনিরুজ্জামান বলেন, ‘দেখলেন তো ক্রেতা আসে না। প্রতিদিন লস করতেছি।’

শান্তিনগর মোড়ে কথা হয় দ্য নোয়াখালী বোর্ডিং স্টোরের মালিক মো. শাহজাহানের সঙ্গে। তিনি বলেন, সারা দিন ধুলা-বালু ঢোকে। ঘণ্টায় ঘণ্টায় দোকান ঝাড়তে হয়। ক্রেতারা এই খারাপ রোড থেকে পণ্য কেনেন না। ক্রেতা আসেন না বললেই চলে।

রাজারবাগ ২ নম্বর গেটের অন্যদিকে তামান্না ফার্মেসিতে গিয়ে দেখা গেল, জাকির হোসেন ও শরিফুল ইসলাম নামের দুই কর্মী দোকান ঝাড়ু দিয়ে দোকান পরিষ্কার করছেন। তাঁদের মুখে মাস্ক। দুই কর্মী জানালেন, উড়ালসড়কের কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে ধুলা ঢোকে তাঁদের দোকানে। সব সময় পরিষ্কার করতে হয়। এই ধুলার এলাকায় তাঁদের ক্রেতাও অনেক কমে গেছে।

মালিবাগ থেকে রামপুরার দিকে কিছু দূরে যেতে চোখে পড়ে আহমদ হোটেল ও রেস্টুরেন্ট নামের একটি খাবারের দোকান। ভেতরে ঢুকে দেখা গেল খাবার বিক্রি হয়নি। ক্রেতাও তেমন নেই। দোকানের ব্যবস্থাপক মো. মহসিন বলেন, ‘দোকান চলে না। মানুষ ধুলার জন্য খাবার খেতে আসেন না। স্টাফদের বেতন ঠিকমতো দিতে পারি না বলে অনেকে কাজ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। এই দোকানের মালিকও দোকান কিছুদিনের মধ্যে বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’ তিনি জানান, দোকান বন্ধ হলে তিনিও ফরিদপুরে দেশের বাড়িতে চলে যাবেন। আর ঢাকায় থাকবেন না।

এই ফ্লাইওভার নির্মাণকাজের প্রজেক্ট ম্যানেজার তুহিন বিন আজাদ বলেন, তিন বছর আগে এই ফ্লাইওভার নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। চলতি বছরের জুনে এর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ