র্যাবের অভিযানে ১৫ জিম্মিকারী আটক
সাইফুর রহমান, প্রতিবেদক, এবিসি নিউজ বিডি,
ঢাকাঃ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আন্তর্জাতিক মানবপাচার ও জিম্মিকারী চক্রের ১৫ সদস্যকে বিপুল পরিমান পাসপোর্ট, বিভিন্ন দেশের জাল ভিসা ও ভিসা তৈরির সামগ্রী, বিদেশীমুদ্রা সহ নগদ ১৬৪৫৬১৩ টাকা উদ্ধার করেছ করেছে র্যাব-৩ ।
১৯ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) বেলা সারে ১২ টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারস্থ র্যাব মিডিয়া সেন্টারে র্যাবের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব পরিচালক, লে. কর্নেল খান্দকার গোলাম সারোয়ার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন ।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব পরিচালক বলেন, দেশের জাতীয় আয়ের ১৪% অর্জিত হচ্ছে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের মাধ্যমে। তাই এ খাতকে বিভিন্ন প্রতারক চক্রে হাতথেকে মুক্ত করার জন্য র্যাব প্রতিষ্ঠা হতে আজ পর্যন্ত ১৫৩ টি অভিযান পরিচালনা করে, এইসব চক্রের ৪৪৮ জন সদস্যকে গ্রেফতার করে ৭০২ জন ভিকটিম উদ্ধার করেছে ।
তিনি আরো বলেন, এই চক্রের হাতে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে থাকা সহজ-সরল মানুষকে সিঙ্গাপুর, ইউকে, ইউএসএ, ইটালীসহ কানাডা পর্যন্ত কম খরচে পাঠানোর কথা বলে এসব ফাদে ফেলানো হয়। পরে এদেরকে এয়ারপোর্টের কিছু অসাধু কর্তার সাহায্যে এসকল জাল ভিসার মাধ্যমে লিভিয়াসহ মালয়েশিয়ায় পাঠানো হয়। এর পর ঐ দেশ অবস্থানরত আন্তর্জাতিক মানবপাচারকারী সদস্যরা তাদের পাসপোর্ট নিয়ে নেয় এবং তাদের বিভিন্ন জায়গায় কাজ করাতে বাধ্য করে । অনেককে আবার জিম্মি করে পাচ লক্ষ টাকা থেকে আট লক্ষ টাকা করে মুক্তিপণ আদায় করে থাকে।
চলতি মাসের দুই তারিখ নুরুল ইসলাম নামের এক ভিকটিমের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে সংবাদের সত্ততা যাচাই করে অভিযানে নামে র্যাব-৩ । এরই ধারাবাহিকতায় নুরুল ইসলামের সূএ ধরে প্রথমে রাজধানীর বারিধারাস্থ মোস্তফা হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট এ গত ৭ (সাত) জানুয়ারি অভিযান চালিয়ে এই চক্রের মূল হোতা বি-বাড়ীয়ার সেলিমুজ্জামান (৪১) , টাঙ্গাইল এর শহিদুল ইসলাম (৪৭), গাজীপুরের মাসুম আহমেদ (৩৬) দের আটক করে। এদের সূএ ধরে লিভিয়ায় জিম্মিকৃত মোঃ সুমনকে উদ্ধারসহ এয়ারপোর্টের আশপাশের এলাকা হতে এই চক্রের আরো ১১ জনকে আলামতসহ গ্রফতার করে র্যাব।
র্যাব জানায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সেলিম মাস্টারে আগে একটি স্কুলের শিক্ষক ছিলেন। প্রায় দশ বছর ধরে তিনি অপরাধ কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন। দেশে সক্রিয় থাকা বিভিন্ন পাচারচক্রের সদস্যরা বিভিন্ন সময় তার সঙ্গে কাজ করতেন। তাদের অনেককেই সেলিম মাস্টার এখনও নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন বলে জানায় র্যাব।
র্যাবের অভিযানে যে চক্রটি গ্রেফতার হয়েছে তার মূল হোতা রাজধানীর উত্তর বাড্ডা এলাকার আব্দুল হালিম। হালিমকে গ্রেফতার করার সব প্রস্থুতি থাকা সত্ত্বেও সে পালিয়ে যায়। তার নামে আরো মানবপাচারের মামলাও রয়েছে।
অভিযানে হালিমের একান্ত সহযোগী তার স্ত্রী সাহিদা বেগমকে গ্রেফতার করেতে সক্ষম হয়েছে র্যাব । র্যাব জানান, সাহিদা নিজেও ওই চক্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং হালিম কে গ্রেফতার করার জন্যও চেস্টা চালাচ্ছে।
র্যাব আরো জানান, এই হালিমের সাথেই এয়ারপোর্টের কিছু অসাধু কর্মচারী কর্মকর্তা জড়িত রয়েছে। তাই হালিমকে গ্রেফতার করতে পারলেই ওই সকল কর্মকর্তার তথ্য পাওয়া যাবে বলে জানান এবং আটককৃত ব্যক্তিদের ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে ।