রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে সুন্দরবনের ক্ষতি হবে না: প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাগেরহাটের রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে সুন্দরবনের পরিবেশের কোনো ক্ষতি হবে না।

ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরামের ৪৭তম বার্ষিক সম্মেলনের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আল গোর উত্থাপিত একটি ইস্যুর প্রেক্ষাপটে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বিশ্বখ্যাত পরিবেশবাদী আল গোরকে বাংলাদেশ সফরে এসে এই প্রকল্প দেখার আমন্ত্রণ জানিয়ে বলেন, রামপালে কি ঘটছে তা দেখতে বাংলাদেশ সফরে আসুন এবং নিজেই দেখুন এটি (বিদ্যুৎ কেন্দ্র) পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কিনা।

শেখ হাসিনা ও আল গোর ছাড়াও এখানে বুধবার সন্ধ্যায় কংগ্রেস হলে ‘লিডিং দ্য ফাইট এ্যাগেইনস্ট ক্লাইমেট চেঞ্জ’ শীর্ষক এই অধিবেশনে নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী এলনা সোলবাগর্, এইচএসবিসি’র সিইও স্টুয়ার্ট গাল্লিভার, কফকো এগ্রি’র সিইও জিংগতাও চি অংশগ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি প্রেস সচিব মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিরোধী আন্দোলনের তীব্র সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, একটি গোষ্ঠী এ নিয়ে অহেতুক ইস্যু সৃষ্টি করছে। তারা আসলে কি চায় এবং তাদের উদ্দেশ্যই বা কি সেটা আমি জানি না। হতে পারে তাদের মনে ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য আছে।

তিনি বলেন, এই প্লান্ট কেন এবং কিভাবে পরিবেশের ক্ষতি করবে এ ব্যাপারে রামপাল প্রকল্প বিরোধীরা কোনো যৌক্তিক কারণ তুলে ধরতে পারেননি। এমনকি তারা প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনের আহ্বানেও সাড়া দেয়নি।

বর্তমান সরকার পরিবেশ রক্ষায় সব ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যে কোনো বিষয়ে আমার চেয়ে আর কেউ অধিক উদ্বিগ্ন নন। কোন প্রকল্পে কোন রকম ক্ষতির সম্ভাবনা থাকলে তার অনুমতি আমি দেব না।

তিনি বলেন, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র সুন্দরবনের আউটার বাউন্ডারির ১৪ কিলোমিটার দূরে এবং ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের ৭০ কিলোমিটার দূরে নির্মিত হবে। এছাড়া এটি হবে পরিচ্ছন্ন কয়লা ভিত্তিক প্রকল্প। এতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে।

পরিবেশ সুরক্ষায় তার সরকারের ব্যাপক উদ্যোগ এবং এ ব্যাপারে বাংলাদেশের অঙ্গীকারের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি যখন ১৯৯৬ সালে প্রথম সরকার গঠন করেন তখন দেশে ৭ শতাংশ বনাঞ্চল ছিল। যা বর্তমানে ১৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে এবং দেশে ২৫ শতাংশ বনাঞ্চল করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সমুদ্রে যেভাবে উচ্চতা বাড়ছে এবং দেশে যেভাবে বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হচ্ছে তাতে এই পরিস্থিতি কিভাবে মোকাবেলা করা হবে, প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমুদ্রের উচ্চতা এক মিটার বৃদ্ধি পেলে দেশের বিস্তীর্ণ এলাকা পানির নিচে তলিয়ে যাবে।

শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় বৃক্ষরোপণ করে সবুজ বেস্টনি গড়ে তোলা এবং জেগে উঠা নতুন চরে বনসৃজন করাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

সূত্র: বাসস

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ