ডিসিদের বিচারিক ক্ষমতা দেওয়ার বিষয়টি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ আইনমন্ত্রী ব্যারিষ্টার শফিক আহমেদ বলেছেন, জেলা প্রশাসকদের সংক্ষিপ্ত বিচারিক ক্ষমতা দেওয়ার বিষয়টি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সংবিধানের ২২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তাদের বিচারের ক্ষমতা দেওয়ার সুযোগ নেই।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিসভা কক্ষে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের তৃতীয় এবং শেষ দিনে আইনমন্ত্রনালয় সংক্রান্ত অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন। এর আগে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের প্রথম দিনে জেলা প্রশাসকরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় সংক্ষিপ্ত বিচারিক ক্ষমতা এবং ফৌজদারি অপরাধের জন্য অভিযোগ আমলে নেওয়ার ক্ষমতা চান।
আইনমন্ত্রী বলেন, বিচারিক কাজ নির্বাহী বিভাগ করতে পারবে না। জেলা প্রশাসকদের সামনে কোন ঘটনা ঘটলে তারা তা মোবাইল কোর্ট (ভ্রাম্যমান আদালত) বসিয়ে সম্পন্ করতে পারবেন।
ব্যারিষ্টার শফিক আহমেদ বলেন, রাষ্ট্র বিচার বিভাগকে নির্বাহি বিভাগ থেকে আলাদা করার কাজ নিশ্চিত করবে। সেই লক্ষে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ফৌজদারি কার্যবিধি পরিবর্তন করে এ বিচারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটদের হাতে। নির্বাহি বিভাগের ওপর বিচারের দায়িত্ব যেহেতু সংবিধান ও সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে নিশ্চিত করা হয়েছে। তাই এটা কোনভাবেই সম্ভব নয়। কারণ সংবিধান রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন।
আইনমন্ত্রী বলেন, সংবিধান অনুযায়ী বিচাররিক ক্ষমতা বিচারিক ম্যাজিস্টের হাতের থাকবে। যারা নির্বাহি বিভাগের ম্যাজিট্রেট, তারা নির্বাহি বিভাগেই কাজ করবে।
তিনি জানান, মোবাইল কোর্টের কিছু ক্ষমতা দেওয়া আছে। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের (মোবাইল কোর্ট) সামনে যদি অপরাধ সংঘটিত হয়, সেই ক্ষেত্রে বিচারিক ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবে।
আইনমন্ত্রী বলেন, জেলা প্রশাসকরা একটা প্রশ্ন তুলেছেন যে ‘অপরাধ স্বীকার করলে বিচার করা যায়, কিন্তু স্বীকার না করলে শাস্তি দেওয়া যায় না’ কথাটি রয়েছে। আমরা এটি বিশ্লেষণ করে দেখবো সংশোধন করা যায় কিনা। যদিও সমস্ত আইনটা পড়লে দেখা যাবে মোবাইল কোর্টের সামনে অপরাধ করলে শাস্তি দিতে পারবে। সেখানে আর অপরাধ স্বীকার করার প্রয়োজন হয়না। তবু কখনও কোন জটিলতা দেখা দেয়, তাহলে আমরা পরীক্ষা করে দেখছি, সেই অংশটুকু বাদ দেবো মোবাইল কোর্ট আইন থেকে।
বার বার ডিসিরা বিচারের ক্ষমতা চাচ্ছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ফৌজদারি অপরাধের বিচারের দায়িত্ব বিচারিক আদালতের। আমরা সংবিধানের ২২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ফেজদারি কার্যবিধি সংশোধন করেছি। এমন কোন বিধান আমরা করতে পারবো না যা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক আইন করলে সর্বোচ্চ আদালত তা বাতিল করে দেবে। পার্লামেন্টে করলেও তা বাতিল হয়ে যাবে।