তাহলে কোনটা পক্ষ কোনটা নিরপেক্ষ ?
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আপনি যাঁকে প্রধান উপদেষ্টা করতে চেয়েছিলেন, সেই সাবেক বিচারপতি কে এম হাসানকে সার্চ কমিটিতে রাখার জন্য নাম প্রস্তাব করেছেন। সেই হাসান সাহেব কি বিএনপির আন্তর্জাতিক-বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন না? তাহলে কোনটা পক্ষ, কোনটা নিরপেক্ষ?’
আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর গুলিস্তানের মহানগর নাট্যমঞ্চে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের অন্তর্গত ২০ নম্বর ওয়ার্ডের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। নির্বাচন কমিশন গঠনে বিএনপি বা অন্য রাজনৈতিক দল রাষ্ট্রপতিকে সার্চ কমিটিতে রাখার জন্য কাদের নাম প্রস্তাব করেছেন, সেটা প্রকাশ হয়নি। ওবায়দুল কাদেরই প্রথম কারোর নাম প্রকাশ করলেন।
গতকাল শনিবার রাতে গুলশানের নিজ কার্যালয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেন, ‘সরকারের ইচ্ছা অনুযায়ী ও মেরুদণ্ডহীন লোক দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না।’
যুবলীগের আজকের কর্মসূচিতে খালেদা জিয়ার এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনার সঙ্গে আমি দ্বিমত করছি না। সবিনয়ে বলছি, আপনি যে আজিজ মার্কা ইসি করেছিলেন, সেই এম এ আজিজ কি বিএনপির লোক ছিলেন না?’
ইসি গঠনে সরকারের হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে কাদের বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন রাষ্ট্রের অভিভাবক। তিনি যে নাম দেবেন, সেখানে বিএনপি-আওয়ামী লীগের কোনো কমিটি বা প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগের কোনো সমর্থকের নাম থাকবে না, এটা পরিষ্কারভাবে বলতে পারি। বিএনপি যা করেছে, আওয়ামী লীগ তা করবে না।’
নেতা-কর্মীদের সংশোধন হয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে জিতেই গেছি, এই আত্মসন্তোষ, এই মানসিকতা পরিহার করতে হবে। ভালোর জন্য আশা করতে হবে, খারাপের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। খারাপ কাজ করলে খারাপ সময়ে আমরা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হব। একই সঙ্গে ভালো কাজ যারা করছে, তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কাজেই এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।’
২০০১-০৬ সালের তৎকালীন চারদলীয় জোট সরকারের দমন-নিপীড়নের কথা নেতা-কর্মীদের স্মরণ করিয়ে দেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘আরেকবার যদি আমাদের ক্ষমতা হারাতে হয়, যারা আসবে, তারা ২০০১-০৬-এর চেয়েও ভয়ংকর মূর্তি নিয়ে আবির্ভূত হবে।’
দলের কয়েকজন সাংসদকে ডেকে সংশোধন হয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পার্টির নামে কোনো অপকর্ম সহ্য করা হবে না। আমরা ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছি। আমি চার থেকে পাঁচজন সংসদ সদস্যকে পার্টি অফিসে ডেকে সতর্ক করে দিয়েছি, সংশোধন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। আরও অনেককে ডাকা হচ্ছে।’
ঢাকা কলেজে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের সমালোচনা করেন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘এই ধরনের অপকর্মের পুনরাবৃত্তি চাই না।’
২০ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি শেখ সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ, ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম। সম্মেলন পরিচালনা করেন ২০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এ কে আজাদ।