ফেসবুক লাইভে সাংসদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র মহড়া
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আবু ওবাইদা শাফির ফেসবুকে লাইভ ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। দেশীয় অস্ত্র হাতে নিয়ে শাফি তাঁর সমর্থকদের সঙ্গে খোকসা বাজারে স্থানীয় সাংসদ আবদুর রউফকে মারধর করার জন্য অবস্থান নেন। গতকাল সোমবার রাতে ওই ভিডিও সরাসরি প্রচার করেন।
এর আগে বড় ভাইয়ের মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে অস্ত্র উঁচিয়ে গুলি ছুড়ে উল্লাস করেছিলেন কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা পৌরসভার মেয়র ও ভেড়ামারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীমুল ইসলাম। ১৩ জানুয়ারি রাতে তাঁর গুলি ছোড়ার দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সরাসরি প্রচার করা হয়। এরপর শাফির ফেসবুক লাইভ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়।
যুবলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক মাস আগে কুষ্টিয়া জেলা কমিটির দেওয়া খোকসা উপজেলা কমিটিতে আবু ওবাইদা শাফিকে আহ্বায়ক করা হয়। সম্প্রতি ওই উপজেলা যুবলীগের ২১ সদস্যের পৃথক একটি আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেয় সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটি। কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমোদিত কমিটিতে আল মাসুম মোর্শেদ শান্তকে আহ্বায়ক করা হয়। ওই কমিটির অনুমোদনপত্র গতকাল সোমবার নেতাদের হাতে তুলে দেওয়ার সময় কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনের সাংসদ আবদুর রউফ উপস্থিত ছিলেন। ওই কমিটি থেকে বাদ পড়েন শাফি ও তাঁর অনুসারীরা। এতে ক্ষিপ্ত হন শাফি। এরপর তাঁরা অস্ত্র নিয়ে রাস্তায় নেমে সাংসদ ও নতুন কমিটির নেতাদের খুঁজতে থাকেন।
গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে ফেসবুকে শাফি আইডিতে আপলোড করা ভিডিওতে দেখা যায়, শাফি রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন আর লাইভে কথা বলছেন। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন বেশ কিছু লোকজন। এ সময় সম্ভবত মুঠোফোনে তাঁকে অন্য কাউকে বলতে দেখা গেল, ‘এখানে…এমপিকে (আবদুর রউফ) কে দাবড়ানো হবি। আমি হচ্ছি আমার ফেসবুকে লাইভে দেখাচ্ছি, দেখেন।’ এরপর শাফি উপজেলা যুবলীগের কমিটির প্রসঙ্গ এনে বলেন, ‘জেলা কমিটি আমার আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দিছে। সেই কমিটির মেয়াদ শেষ না হওয়ায় সেটা ভাঙি দিয়ে কমিটি দিছে।’ এই ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে কুষ্টিয়ায় শুরু হয় ব্যাপক তোলপাড়।
এ ব্যাপারে সাংসদ আবদুর রউফ বলেন, ‘ঘটনাটি আমি শুনেছি। আমি খোকসায় যাচ্ছি। আমাকে খোঁজা লাগবে না। আমার সামনে আসুক। এ ব্যাপারে ডায়েরি করব, কেস হয়ে যাবে।’
উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আল মাসুম মোর্শেদ বলেন, ‘জেলা কমিটি কোনো কমিটি দিতে পারে না। আমার বিরুদ্ধেও ফেসবুকে যা বলা হয়েছে, তাতে আমি মামলা করব।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আবু ওবাইদা শাফি মুঠোফোনে বলেন, ‘গঠনতন্ত্র অমান্য করে নতুন কমিটি করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে রাতে শহরে বিক্ষোভ–প্রতিবাদ মিছিল করা হয়েছে। অনেকে অনেক বিভ্রান্তমূলক কথা বলতে পারে। অস্ত্রের রাজনীতি যুবলীগ করে না। সেখানে নেতা-কর্মীরা হয়তো নানা কথা বলেছেন।’ ফেসবুক সরাসরি প্রচারের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি তখন কেন্দ্রীয় নেতার সঙ্গে কমিটি নিয়ে কথা বলছিলাম। সেখানে আপত্তিকর কিছু বলা হয়নি।’