সার্চ কমিটিতে যাঁরা থাকছেন

নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে আপিল বিভাগের একজন বিচারপতির নেতৃত্বে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি করছেন রাষ্ট্রপতি। নিয়মানুযায়ী সার্চ কমিটির সদস্যদের দেওয়া নামগুলো থেকে রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্য কমিশনারদের নিয়োগ দেবেন। আজ অথবা কালের মধ্যেই এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করতে পারে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
সার্চ কমিটিতে থাকছেন যাঁরা: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দুটি সূত্র জানিয়েছে, আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি ছাড়াও সার্চ কমিটিতে থাকছেন হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতি, মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিএজি) মাসুদ আহমেদ, সরকারি কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য শিরীণ আখতার।
২০১২ সালে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান নির্বাচন কমিশন গঠন করতে চার সদস্যবিশিষ্ট সার্চ কমিটি করেছিলেন। জিল্লুর রহমান ওই কমিটিতে আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে প্রধান করেছিলেন। সদস্য হিসেবে তিনি রেখেছিলেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিএজি) এবং সরকারি কর্মকমিশনের চেয়ারম্যানকে।
রাষ্ট্রপতির কার্যালয় এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দুটি সূত্র জানিয়েছে, সার্চ কমিটি গঠন করতে জিল্লুর রহমানের ওই ফর্মুলা বর্তমান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদও অনুসরণ করেছেন। তবে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম এবং নারী প্রতিনিধি হিসেবে শিরীণ আখতারকে অন্তর্ভুক্ত করে এর আকার বাড়িয়েছেন।  সার্চ কমিটিতে থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে শিরীণ আখতার বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে খবরটা পেলাম। এই দায়িত্বকে সুন্দর এবং পবিত্র দায়িত্ব বলে মনে করছি। আশা করি, সুষ্ঠুভাবে এ দায়িত্ব পালন করতে পারব।’
১৯৯৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকেই শিরীণ আখতার আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন হলুদ দলের সঙ্গে রয়েছেন। ২০১৪ সালে হলুদ দলের প্যানেল থেকে শিক্ষক সমিতির কার্যকরী সদস্য হয়েছিলেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে দেওয়া জীবনবৃত্তান্ত থেকে জানা যায়, শিরীণ আখতারের বাবা মৃত আফসার কামাল চৌধুরী কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন।
সার্চ কমিটি কোন পর্যায়ে রয়েছে: নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটির চিঠি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়। সেখান থেকে একটি সারসংক্ষেপ আকারে তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর সেটি আবার রাষ্ট্রপতির কছে যাবে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর ওই বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সার্চ কমিটি গঠনসংক্রান্ত গেজেট আজকালের মধ্যেই হবে বলেও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জানা গেছে।
নতুন কমিশন গঠন নিয়ে গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ মোট ৩১টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি আলোচনা করেন।
রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সূত্র জানায়, রাষ্ট্রপতি রাজনৈতিক দলগুলোর দেওয়া প্রস্তাবগুলো যাচাই-বাছাই করে সার্চ কমিটি করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন। ওই সূত্র আরও জানায়, সময়ের অভাবে এবার নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়ন বা অধ্যাদেশ জারি করছেন না রাষ্ট্রপতি।
এর আগে ২০১২ সালের ২৩ জানুয়ারি তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে প্রধান করে চার সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করেছিলেন।
একজন কমিশনার বাদে বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্য নির্বাচন কমিশনারদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ