হরতাল-সমর্থকদের ওপর পুলিশের কাঁদানে গ্যাস
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, সুন্দরবন-বিনাশী সব চুক্তি বাতিলসহ সাত দফা দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীতে আধাবেলা হরতাল পালিত হয়েছে। তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ডাকা এই হরতালের সমর্থনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মিছিল-সমাবেশ হয়। শাহবাগে হরতাল-সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ জলকামান ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে।
হরতাল-সমর্থকেরা সকাল ছয়টা থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় জড়ো হন। তাঁরা মিছিল-সমাবেশ করেন। রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বন্ধসহ বিভিন্ন দাবিতে স্লোগান দেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় জড়ো হওয়া হরতাল-সমর্থকেরা সকালে মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে অগ্রসর হন। জাতীয় জাদুঘরের কাছাকাছি গেলে তাঁদের বাধা দেয় পুলিশ। পুলিশের সঙ্গে তাঁদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। পুলিশ জলকামান ব্যবহার করে। কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। কয়েক দফা এই ঘটনা ঘটে। পরে হরতাল সমর্থকেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে সরে যান।
শাহবাগের ঘটনায় বেশ কয়েকজন হরতাল-সমর্থক আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি লাকী আক্তার, ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজীর রয়েছেন।
হরতালের সমর্থনে রাজধানীর মিরপুর, মোহাম্মদপুর, জাতীয় প্রেসক্লাব, পল্টন, দৈনিক বাংলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রভৃতি এলাকায় বিক্ষোভ, মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে। শাহবাগ ছাড়া অন্যত্র অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, গতকাল বুধবার রাত থেকেই হরতাল-সমর্থকদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছিল। হরতালের সমর্থনে আজ সকালে শাহবাগ এলাকায় শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলা করে পুলিশ। এতে কয়েকজন আহত হন। ভয়ভীতি ও হামলা সত্ত্বেও তাঁদের আন্দোলন চলবে।
হরতাল চলাকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশে জোনায়েদ সাকি বলেন, রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিলের আন্দোলনে দমন-পীড়ন চালানো সরকারের দুর্বলতারই লক্ষণ। ভারতকে খুশি করার জন্য সরকার এই প্রকল্প করছে। জনগণের করের টাকায় রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পক্ষে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। তীব্র আন্দোলনের মাধ্যমে এই প্রকল্প বাতিল করা হবে।
সমাবেশে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলন থেকে তাঁদের পিছিয়ে আসার কোনো সুযোগ নেই। এই প্রকল্প বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশি হামলার নিন্দা জানিয়েছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর। এ ঘটনার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন তিনি।
পথচারী, সাইকেল-রিকশা-ভ্যান, অ্যাম্বুলেন্স, গণমাধ্যমসহ বিদ্যুৎ-ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি, কাঁচাবাজার, ওষুধের দোকান এই হরতালের আওতামুক্ত ছিল।