বাবুলকে সব সময় প্রশ্ন করছি খুনি কে

নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: মামলার বাদীর (সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল অক্তার) দায়িত্ব ছিল তদন্ত কর্মকর্তার সঙ্গে শ্বশুর-শাশুড়িকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া। কিন্তু তিনি আসেননি। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয় থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন মাহমুদার বাবা মোশাররফ হোসেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন মাহমুদার মা শাহেদা মোশাররফ।
মোশাররফ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, খুনি যে-ই হোক—বাবুল, তাঁর বংশধর, বন্ধুবান্ধব, পুলিশ—খুঁজে বের করতে
তদন্ত কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘পরকীয়ার কারণে এ খুন বলব না। বাঙালি সমাজে এ ধরনের ঘটনা অবাস্তব না। পুলিশ সবকিছু দেখুক। তদন্ত কর্মকর্তা ও বাবুলকে সব সময় প্রশ্ন করছি, খুনি কে? এ জন্য চেয়েছি বাবুলের চাকরিটা থাক। খুনিদের বের করুক। অনেক মামলার রহস্য উদ্‌ঘাটন করেছে, স্ত্রী হত্যার রহস্যটাও বের করুক।’

মামলা নিয়ে বাবুল আক্তারের সঙ্গে কথা হয় কি না—এ প্রশ্নে মাহমুদার মা শাহেদা মোশাররফ বলেন, ‘সে তো (বাবুল) এখন চাকরি নিয়ে ব্যস্ত। তার সঙ্গে কথা হয়, কেস নিয়ে কোনো কথা হয় না। তাকে সব সময় প্রশ্ন করা হয়েছে, খুনি কে? আমরা বলেছি, এটি তোমাকে (বাবুল) বের করতে হবে।’

গতকাল বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সোয়া ৩টা পর্যন্ত ৩ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট মাহমুদার মা শাহেদা মোশাররফের সঙ্গে কথা বলেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. কামরুজ্জামান। তিনি একাই বিভিন্ন বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করেন। এ সময় পাশের কক্ষে বসে ছিলেন মোশাররফ হোসেন। বেলা ৩টার দিকে তাঁকেও তদন্ত কর্মকর্তার কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়।

গত বছরের ৫ জুন চট্টগ্রাম নগরের জিইসি মোড় এলাকায় ছুরিকাঘাত ও গুলি করে হত্যা করা হয় মাহমুদা খানমকে। এ ঘটনায় তাঁর স্বামী বাবুল আক্তার (তখন পুলিশ সুপার ছিলেন) অজ্ঞাতপরিচয় তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন। এরপর ২৪ জুন মধ্যরাতে ঢাকার বনশ্রী এলাকার শ্বশুরবাড়ি থেকে বাবুল আক্তারকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। প্রায় ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে আবার বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়। ৬ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, ‘বাবুলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে চাকরিচ্যুত করা হলো।’

তদন্ত কর্মকর্তার সঙ্গে কী বিষয়ে কথা হয়েছে, সাংবাদিকদের এই প্রশ্নে শাহেদা মোশাররফ বলেন, ‘মামলা-সংক্রান্ত কথা হয়েছে। বাবুলকে সন্দেহ করি কি না, তা তদন্ত কর্মকর্তা জানতে চাননি।’ তবে বাবুলকে তিনি সন্দেহ করেন না। তিনি বলেন, মাহমুদার ব্যবহৃত মুঠোফোনটি সচল রয়েছে। সপ্তাহ খানেক আগে সেটিতে ফোন করা হলে এক অটোরিকশাচালক ফোন ধরেন। ফোনটি সেই চালক হাতিরঝিলে পেয়েছেন বলে তাঁকে জানান। মুঠোফোনটি উদ্ধার করতে তিনি তদন্ত কর্মকর্তাকে বলেছেন।

এর আগে ২ জানুয়ারি বাবুলের বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা আবদুল ওয়াদুদ মিয়া ও মা শাহেদা ওয়াদুদের সঙ্গে কথা বলেন তদন্ত কর্মকর্তা। এ ছাড়া গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর বাবুল আক্তার এবং ২২ ডিসেম্বর মাহমুদার বাবা মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

মাহমুদার মায়ের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান। তিনি বলেন, মাহমুদার ব্যবহৃত মুঠোফোনটি উদ্ধারের জন্য পুলিশের বিশেষ দল কাজ করছে। বাদী বাবুল আক্তার তাঁর শ্বশুর-শাশুড়িকে নিয়ে আসেননি অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, এটি তাঁদের ব্যক্তিগত বিষয়। মামলার প্রয়োজনে বাবুল আক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তিনি সহযোগিতা করছেন।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ