অনুসন্ধান কমিটির পাঁচ সদস্যদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন বিএনপির
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে গঠিত সার্চ বা অনুসন্ধান কমিটির পাঁচ সদস্যদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিএনপি। দলটি বলছে, এমন ব্যক্তিদের নিয়ে অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে, যাঁদের নিরপেক্ষ বিবেচনা করার কোনো অবকাশ নেই।
আজ শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অনুসন্ধান কমিটি নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রতিক্রিয়া জানান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুল বলেন, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন মাননীয় বিচারপতিকে প্রধান করে ছয় সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগের বার গঠিত অনুসন্ধান কমিটিরও প্রধান ছিলেন তিনি। সেই কমিটির প্রস্তাবের ভিত্তিতে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন বর্তমান ইসি গঠিত হয়। বর্তমান ইসি অযোগ্য, মেরুদণ্ডহীন, বিতর্কিত। আগের অনুসন্ধান কমিটির প্রধানকে নতুন অনুসন্ধান কমিটির প্রধান করার অর্থ—সরকার আরেকটি অনুগত ও অযোগ্য ইসি করতে চায়।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, অনুসন্ধান কমিটির আরেক সদস্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি। তিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা ছিলেন। আওয়ামী লীগ-সমর্থিত আইনজীবী হিসেবে বহুল পরিচিত ছিলেন। তাঁর পিতা আওয়ামী লীগের অন্যতম নেতা ছিলেন। তাঁর ছোট ভাই প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব হিসেবে কর্মরত আছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, অনুসন্ধান কমিটির আরেক সদস্য সরকারি কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় তিনি নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব ছিলেন। বিতর্কিত সেই নির্বাচনকে নিয়মসিদ্ধ করার পুরস্কার হিসেবে অবসরের পর তাঁকে চেয়ারম্যান করা হয়েছে। তিনি সরকারের ইচ্ছা পূরণে সচেষ্ট থাকবেন, এটাই স্বাভাবিক।
অনুসন্ধান কমিটির একমাত্র নারী সদস্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য শিরীণ আখতার। তাঁর সম্পর্কে বিএনপির মহাসচিব বলেন, শিরীণ আখতার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষক নেতা হিসেবে পরিচিত। তাঁর বাবা কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। শিরীণ আখতার নিজেও কক্সবাজার মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী ছিলেন।
অনুসন্ধান কমিটির আরেক সদস্য বাংলাদেশের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মাসুদ আহমেদ। তাঁর সম্পর্কে মির্জা ফখরুল বলেন, রাজনৈতিক সরকারে অধীন একজন সরকারি কর্মকর্তা মাসুদ আহমেদ। তিনি সরকারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছু করার ক্ষমতা রাখেন না। অর্থাৎ, সরকারের ইচ্ছা পূরণে তিনিও কোনো বাধা নয়।
ইসি গঠনে আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে প্রধান করে ছয় সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের নির্দেশে এই কমিটি করে বুধবার প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।