বাংলাদেশীর সেবা করে সব খোয়ালেন সৌদি নাগরিক
মোহাম্মাদ আল সাইফ, এবিসি নিউজ বিডিঃ মানবসেবার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন সৌদি আরবের এক নাগরিক আবদুল্লাহ আল রুকি। তার অধীনে কাজ করতেন বাংলাদেশী মাহবুব আল আলম। তার মাথায় টিউমার ধরা পড়ায় পর পর দু’বার অপারেশন করাতে হয়। এর সব খরচ বহন করেছেন আবদুল্লাহ আল রুকি। তিনি সারা জীবনে যা সঞ্চয় করেছিলেন তার পুরোটাই শেষ করে ফেলেছেন মাহবুবের চিকিৎসা করাতে। এখানেই শেষ নয়। এক পর্যায়ে জমানো অর্থ ফুরিয়ে যাওয়ায় তিনি ৩০ হাজার রিয়াল ঋণ করেন। বাকিটা বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে সংগ্রহ করেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি বিশ্বাসের, মানবসেবার এক বিরল নজির স্থাপন করেছেন। গতকাল অনলাইন এমিরেটস এ খবর দিয়েছে। এতে বলা হয়, মাহবুব আল আলম সৌদি আরব গিয়েছিলেন পবিত্র হজ পালন করতে। তখনই তাকে অবৈধ উপায়ে কাজে নিয়োগ করেন আবদুল্লাহ আল রুকি। কাজে নিয়োগের পর তিনি জানতে পারেন মাহবুবের ব্রেনে টিউমার রয়েছে। এর আগে তিনি এজন্য তিন মাসেরও বেশি সময় ছিলেন হাসপাতালে। ফলে মাহবুবকে হাসপাতালে ভর্তি করেন আল রুকি। তার মাথায় দু’বার অপারেশন করা হয়। এতে এরই মধ্যে খরচ হয়ে গেছে প্রায় ৮০ হাজার রিয়েল। এর মধ্যে সারা জীবন নিজের জমানো ২০ হাজার রিয়েল এবং ঋণের রয়েছে ৩০ হাজার রিয়েল। বাকি অর্থ তিনি বিভিন্ন বন্ধু ও আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে দান হিসেবে পেয়েছেন। মাহবুব হজ করতে গিয়ে সে দেশে নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত সময় অবস্থান করছিলেন। এখন থেকে ৭ বছর আগে তাকে কাজে নিয়োগ দেন আল রুকি। অবশেষে সৌদি সরকার এ বছর অবৈধ অভিবাসীদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে। এ সুযোগে আল রুকি চেষ্টা করেন মাহবুবকে বৈধতা দিয়ে একটি কাজ দেয়ার। কিন্তু সেক্ষেত্রে মেডিকেল পরীক্ষায় দেখা যায় তার ব্রেনে ক্যান্সার ছিল। আল রুকি এ বিষয়ে বলেন, দু’টি অপারেশনের পর মাহবুবের এখন অনেক ওষুধ ও অন্যান্য জিনিসপত্রের দরকার। এখনও ঋণ করে এবং এর ওর কাছ থেকে অর্থ তুলে তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ব্যবস্থা চালিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি। মাহবুব একজন বিশ্বাসী। তার প্রতি আমার নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে। আমার বিবেক আমাকে সেই দায় এড়িয়ে যেতে সায় দেয় নি। সারা জীবন যা আমি সঞ্চয় করেছিলাম তার সবই তার পিছনে খরচ করেছি। এখন এ বিশ্বাসী মানুষটির চিকিৎসার জন্য আমি হৃদয়বান সব মানুষের কাছে আর্থিক সাহায্যের আবেদন করছি। সৌদি আরব বা সৌদি আরবের বাইরে থেকে কেউ যদি তাকে সাহায্য করতে চান তাহলে কিভাবে সেই সাহায্য পৌঁছানো যাবে প্রতিবেদনে সেকথা বলেনি এমিরেটস।