আদার দারুণ সব উপকারিতা

নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: খাবারের স্বাদ বাড়ানোর জন্য আদা কুচি বা আদা বাটা ব্যবহার করা হয়। শুধু রান্নাঘরেই নয়, আদার ঔষধি গুণের জন্য চিকিৎসাতেও আদা ব্যবহার করা হয়। হজমশক্তি বৃদ্ধিকারক ও বায়ু নিঃসারক হিসেবে আদার ব্যবহার খুবই প্রাচীন।

আদার দারুণ সব উপকারিতা:
১। যাদের খাওয়ার রুচি হয় না তারা খাওয়ার আগে ১ চা চামচ তাজা আদা কুচি খেয়ে নিন। মুখের রুচি ফিরে আসবে।

২। হাত-পায়ের জয়েন্টে ব্যথা হলে আদার তেল ভালো কাজ করে। খানিকটা অলিভ অয়েলে আদা ছেঁচে নিয়ে ফুটিয়ে নিন ৫ মিনিট। ঠাণ্ডা হলে ছেঁকে এই তেল দিয়ে ম্যাসাজ করুন হাত-পায়ের জয়েন্টে। আদার অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি উপাদান ব্যথা দূর করে।

৩। প্রতিদিন মাত্র ১ ইঞ্চি পরিমাণের আদা কুচি খাওয়া অভ্যাস সাইনাসের সমস্যা প্রতিরোধে সহায়তা করে।

৪। বমি বমি ভাব বা মাথা ঘুরানো দূর করতে একটুখানি আদা স্লাইস করে লবণ দিয়ে চিবিয়ে খেয়ে নিন। দেখবেন বমি ভাব একেবারেই কেটে গেছে।

৫। হজমে সমস্যার কারণে পেটে ব্যথা হলে আদা কুচি খেয়ে নিন। আদা পেটে হওয়া গ্যাসের সমস্যা থেকেও মুক্তি দিতে বেশ কার্যকরী।

৬। খাবারের পুষ্টি দেহে সঠিকভাবে শোষণ করার ক্ষমতা বাড়ায় আদা। তাই প্রতিদিন খুব সামান্য পরিমাণে হলেও আদা খাওয়া অভ্যাস করা উচিত।

৭। বুকে সর্দি বা কফ বসে গেলে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। ২ কাপ পানিতে আদা কুচি দিয়ে ফুটিয়ে নিন। পানি জ্বাল হয়ে যখন অর্ধেক হয়ে আসবে তখন ছেঁকে নামিয়ে ১ টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে পান করুন। বেশ আরাম পাবেন। সর্দি কফের সমস্যা না যাওয়া পর্যন্ত এই আদা চা পান করুন।

তবে আধুনিককালের অসংখ্য গবেষণার মাধ্যমে আদার এন্টি অক্সিডেন্ট গুণসহ অনেক ঔষধি গুণাবলি আবিষ্কৃত হয়েছে।

আদার ঔষধি গুণাবলিসমূহ:
১। প্রতিদিন সামান্য আদা কাচা চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করুন। আদার মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিএইজিং উপাদান ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা দেহের টক্সিন দূর করে এবং দেহে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে ত্বকে বয়সের ছাপ প্রতিরোধ করে।

২। প্রদাহ প্রতিরোধী হিসেবে আদায় রয়েছে জিনজেরল নামক এক সক্রিয় জৈব রাসায়নিক উপাদান যা প্রদাহ প্রতিরোধে খুবই কার্যকর।

৩। সাম্প্রতিক সময়ের গবেষণা থেকে জানা যায়, আদায় বিদ্যমান জিনজেরল নামক সক্রিয় উপাদান মলাশয়ের ক্যান্সার প্রতিরোধে খুবই কার্যকর।

৪। আদার নির্যাসের রয়েছে এন্টি-অক্সিডেন্ট ও প্রদাহ প্রতিরোধী ক্ষমতা। আর এই এন্টি-অক্সিডেন্ট গুণের জন্য আদা ডিম্বাশয়ের টিউমার ও ক্যান্সার প্রতিরোধ-নিরাময়ে খুবই কার্যকর।

৫। সাম্প্রতিক সময়ের কিছু গবেষণা থেকে জানা যায় যে, আদা রক্তের লিপিড কমাতে সাহায্য করে এবং এথেরোস্ক্লেরোসিস প্রতিরোধ করে। তাই হৃদরোগ প্রতিরোধে আদা খুবই কার্যকর। প্রাচীনকাল থেকে বিভিন্ন রোগ ব্যাধিতে আদা ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

৬। খাওয়ার অরুচি হলে সিকি কাপ পানিতে ২ চা চামচ আদার রস ও সামান্য লবণ মিশিয়ে ১০-১৫ মিনিট মুখে পুরে রেখে ফেলে দিলে খাওয়ার রুচি ফিরে আসে।

৭। আদার রসে একটু মধু মিশিয়ে খেলে উপকার হয়।

সতর্কতা
সুফল যেমন আছে কয়েকটি ক্ষেত্রে আবার আদার ব্যবহার হানিকারকও হতে পারে আমাদের পক্ষে। এমনও আছে যাদের আদা খাওয়াই উচিত নয়।

১. কম ওজন:
আদা ওজন কমাতে সাহায্য করে। খিদে কমায় এবং দেহের অত্যধিক ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে। কম ওজনের ব্যক্তিদের তাই আদা খাওয়া উচিত নয়। এতে তাদের স্বাস্থ্য আরও ভেঙে পড়তে পারে।

২. চিকিৎসা চলছে যাদের:
বিশেষ করে ডায়াবেটিস যাদের আছে তাদের বেশি আদা খাওয়া উচিত নয়। কারণ আদা সমস্যা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

৩. অন্তঃসত্ত্বা:
আদা জরায়ুর সংকোচন ঘটাতে সাহায্য করে। অপরিণত অবস্থায় জরায়ুর সংকোচন মা এবং বাচ্চা দু’জনের পক্ষেই ক্ষতিকর। তাই অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের আদা এড়িয়ে চলাই ভাল।

৪. রক্তের সমস্যা:
রক্তের প্রবাহ অনেকাংশে আদার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। তাই যাদের রক্তের সমস্যা আছে,বিশেষ করে হিমোফিলিয়ায় আক্রান্তরা আদা এড়িয়ে চলুন।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ