ডাকাত না চেনে শ্বশুরবাড়ি !
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: চাচাশ্বশুরের ছেলে সৌদিপ্রবাসী। ঘরে টাকা, সোনাদানা থাকতে পারে। ডাকাতি করা গেলে কিছু না কিছু তো মিলবেই। মনে মনে ডাকাতির পরিকল্পনা আঁটেন ভাতিজিজামাই নুরুচ্ছফা তালুকদার। তবে শ্বশুরবাড়িতে ডাকাতি করতে যাচ্ছেন, তা সঙ্গীদের জানাননি। ২৩ জানুয়ারি রাতে ঘরের গ্রিল কাটার পরও ভেতরে ঢুকতে পারেননি আশপাশের লোকজন টের পেয়ে যাওয়ায়। বাধ্য হয়ে আরেক ব্যক্তির বাড়িতে ডাকাতি করেন।
ডাকাতি করতে গিয়ে এক নৈশপ্রহরীকে খুন করার মামলায় গত শনিবার রাতে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থেকে নুরুচ্ছফা তালুকদারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁর সঙ্গে আরও পাঁচজনকে সেদিন গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানায়, নুরুচ্ছফার চাচাশ্বশুরের বাড়ি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার শান্তিনিকেতন এলাকায়। তাঁর ছেলে মো. ইলিয়াছ সৌদিপ্রবাসী।
গতকাল সোমবার সকালে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে নুরুচ্ছফা তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, চাচাশ্বশুরের ছেলে ইলিয়াছ সৌদি আরবে থাকেন। তাঁর ঘরে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার থাকে, এ কথা তিনি আগে থেকেই জানতেন। তাই ডাকাতি করতে যান। কিন্তু সফল হতে পারেননি। পরে এ কথা স্ত্রী জানতে পেরে তাঁকে অনেক বকাঝকা করেন। তবে শ্বশুরবাড়ির লোকজন বিষয়টি জানেন না।
ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত অস্ত্র কোথা থেকে সংগ্রহ করেন, জানতে চাইলে নুরুচ্ছফা তালুকদার জানান, আইয়ুব নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে অস্ত্র ভাড়া আনেন। ডাকাতিতে অংশ নেওয়া একজন ডাকাত লুণ্ঠিত মালামালের ভাগ যা পাবেন, অস্ত্র সরবরাহকারীও তা-ই পাবেন। কোনো কিছু পাওয়া না গেলে এক হাজার টাকা দিতে হবে অস্ত্র সরবরাহকারীকে।
গ্রেপ্তার আরেক ডাকাত নুরুল ইসলাম দলনেতা নুরুচ্ছফাকে ‘ডাকাতের ওপর ডাকাত’, ‘ডাবল ডাকাত’ বলে মন্তব্য করেন। পুলিশ সুপার কার্যালয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ডাকাতির মালামাল বিক্রি করার পর নুরুচ্ছফা তাঁদের এক একজনকে ২০০ টাকা করে ধরিয়ে দেন। টাকা চাইলে বলেন, ‘আরেকবার ডাকাতি করলে বেশি টাকা দিব।’
এ বিষয়ে নুরুচ্ছফা বলেন, তাঁর বাবা অসুস্থ হওয়ায় দলের অন্য সদস্যের বাড়তি টাকা দিতে পারেননি।
পরে সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার নুরেআলম মিনা বলেন, সম্প্রতি বাঁশখালী, আনোয়ারা ও রাঙ্গুনিয়ায় কয়েকটি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। জামিনে বেরিয়ে এসে ডাকাতদের একটি দল মাঠে নেমেছে। তাদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে। রাঙ্গুনিয়ায় ডাকাতির ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত কিছু মালামালও উদ্ধার করা হয়েছে। এই অভিযানে তাঁদের সহযোগিতা করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।