শ্যামল কান্তির পুলিশি প্রহরা প্রত্যাহার

নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে দেওয়া প্রহরা প্রত্যাহার করেছে পুলিশ। তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের আজ বুধবার সকাল থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।
বেলা সোয়া ১১টার দিকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে শ্যামল কান্তি বলেন, গতকাল মঙ্গলবার বন্দর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোখলেছুর রহমান স্কুলে আসেন। আজ থেকে পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়া হবে না বলে জানান তিনি। একই সঙ্গে তাঁকে আর স্কুলে না আসার জন্য বলেন।
শ্যামল কান্তি বলেন, ‘আজ সকালে পুলিশ আসেনি। তাই নিরাপত্তাহীনতায় বাইরে যেতে পারিনি।’
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার খানপুর এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করেন শ্যামল কান্তি। আর পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চবিদ্যালয় বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের কল্যান্দী গ্রামে অবস্থিত।

শ্যামল কান্তি জানান, স্থানীয় সাংসদ সেলিম ওসমান তাঁকে (শ্যামল কান্তি) প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত করার পর তিনি প্রথমে নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালে, পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুলিশি প্রহরায় চিকিৎসাধীন ছিলেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। চিকিৎসা শেষে নারায়ণগঞ্জের বাসায় ফেরেন। এরপর দিনের বেলায় পুলিশের তিন সদস্য এবং রাতে ছয় সদস্য তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে নিরাপত্তা দিতেন। প্রতিদিন পুলিশের তিনজন সদস্য তাঁকে প্রহরা দিয়ে স্কুলে নিয়ে যেতেন।

নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান বলেন, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে পুলিশ নিয়োজিত থাকায় এই মুহূর্তে জনবল-সংকট আছে। তাই শ্যামল কান্তির পুলিশি প্রহরা প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে তাঁর নিরাপত্তার দিকে পুলিশ দৃষ্টি রাখছে।

বন্দর থানার এসআই মোখলেছুর রহমান বলেন, শ্যামল কান্তিকে স্কুলে না আসার ব্যাপারে তিনি কোনো কথা বলেননি। স্কুলে গিয়ে বলেছেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাঁকে আর পুলিশি প্রহরা দেওয়া সম্ভব নয়। তিনি চাইলে এ ব্যাপারে আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশ নিয়ে আসতে পারেন।

জেলা পুলিশ সুপার মঈনুল হক বলেন, আপাতত শ্যামল কান্তির পুলিশি প্রহরার প্রয়োজন নেই। তাই তা প্রত্যাহার করা হয়েছে।

ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে গত বছরের ১৩ মে শ্যামল কান্তিকে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে লাঞ্ছিত করা হয়। এ ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র নিন্দা-প্রতিবাদের ঝড় ও দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি ওঠে। মন্ত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সাংসদ সেলিম ওসমানের কঠোর সমালোচনা করেন। তবে সেলিম ওসমান শুরু থেকে নিজেকে নির্দোষ দাবি করছেন।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ