প্রবাসে চলবে বাংলা চলচ্চিত্র
প্রতিবেদক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ
রূপালী পর্দার স্বর্ণ যুগ এখন অনেকটাই অতীত, এদেশের শিল্প সংস্কৃতিতে দাপিয়ে বেড়ানো বাংলা চলচ্চিত্রের সেই সুদীন যেন কালের গর্বে হারিয়ে যেতে বসেছে। তবে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগৎ বর্তমানে যে অবস্থানে এসে পৌছেছে তা গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে সন্তোষজনক। দেশেই এখন নির্মিত হচ্ছে ভিন্নধর্মী ও নতুন ঘারানার চলচ্চিত্র। আন্তর্জাতিক খ্যাতি, পদক, সাফল্যের পালক এসে জমা হচ্ছে আমাদের ঘরে।
এই পথ আসার পেছনে পাড়ি দিতে হয়েছে চলচ্চিত্র জগতের নানা প্রতিকূল সময়। সুস্থ, সৃজনশীল চলচ্চিত্রের যে ধারা শুরু করেছিলেন শ্রদ্ধেয় জহির রায়হান, আলমগীর কবির, খান আতাসহ খ্যাতিমানদের হাত ধরে, তা এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে এই সময়ের নির্মাতারা।
দেশে তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে ছবিগুলো ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বব্যাপী, তবে বেশিরভাগই ওয়েবভিত্তিক। চলচ্চিত্রপ্রেমীদের হাই রেজ্যুলেশানে অসাধারণ প্লটের বাংলা সিনেমা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হয় দীর্ঘ সময়।
কোন কোন দেশে সেসব চলচ্চিত্র পূর্ণদৈর্ঘ্য স্ক্রীণে প্রদর্শিতই হয় না বাংলাভাষীদের কাছে প্রচুর আগ্রহ থাকা সত্তে¡ও সঠিক ডিস্ট্রিবিউটর ও সংযোগের অভাবে আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী হচ্ছে ক্ষুদ্র পরিসরে। এ পরিসরকে বৃহৎ আকারে ছড়িয়ে দিতেই বেঙ্গলী ফিল্ম কাব ইউকের এ উদ্যোগ।
এ দেশের চলচ্চিত্র শিল্পকে সুদিনের পথে নিয়ে যাওয়াই এর লক্ষ। ইংল্যান্ডের মাটিতে হাজার হাজার বাংলাদেশীর বসবাস, তাদের কাছে এ দেশের চলচ্চিত্র সঠিকভাবে উপস্থাপন এবং জনপ্রিয় করে তোলাই লক্ষ। এতে করে মানসম্মত চলচ্চিত্রের বিকাশ যেমন ঘটবে তেমনি চলচ্চিত্র কেন্দ্রিক অর্থনীতির চাকাও সচল হবে।
এ প্রসঙ্গে বিশেষ অতিথি কাজী হায়াৎ বলেন, আমাদের যেন দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। এর থেকে এখনই যদি ঘুরে না দাঁড়াই তবে এ শিল্প রক্ষা করা কঠিন হবে, এর জন্য ‘বেঙ্গলী ফিল্ম কাব ইউকে’ ধন্যবাদ প্রাপ্য, সাধুবাদ জানাই তাদের এ উদ্যোগকে।
একইসুরে প্রধান অতিথি চিত্রনায়ক ফারুক বলেন, একটি শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সবার ঐকান্তিক ইতিবাচক চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। বেঙ্গলী ফিল্ম কাব ইউকের সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেয়াটা ইতিবাচক লক্ষণ। আমরাও তাদের সহযোগী হিসেবে পাশে আছি। বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ চলচিত্র পরিচালক সমিতির মহা সচিব মুসফিকুর রহমান গুলজার বলেন, বন্ধুত্বের এ হাত আরও আগেই আমাদের প্রয়োজন ছিল। আপনারা এ দেশের চলচ্চিত্র উন্নয়নে কাজ করুন। আমাদের সর্বাত্মক সহযোগীতা থাকবে। অভিনেত্রী সোহানা সাবা আয়োজকদের এ উদ্যোগ বেগবান করার অনুরোধ জনান।
অনুষ্ঠানের সভাপতি এস ইসলাম শাম জানান, আমাদের দেশে যে সব বাংলা চলচিত্র রিলিজ হচ্ছে তা প্রবাসে বসে আমরা দেখতে পাইনা। অথচ বাংলা ছবির প্রতি টান কিন্তু আমাদের কম নয়। সে লক্ষ্যেই এখন থেকে ধারাবাহিক ভাবে ভালো ভালো কিছু বাংলা ছবি আমরা সংগ্রহ করবো এবং প্রতি সপ্তাহেই তা প্রচারের চেষ্টা থাকবে। আমরা সেসব ছবিকেই প্রাধান্য দিবো যা পরিবারের সব সদস্যদের নিয়ে দেখা সম্ভব। সবার সহযোগীতা প্রত্যাশা করে তিনি এদিকে প্রক্রিয়াটি সুষ্ঠ ভাবে পরিচালনা করতে বাংলাদেশ থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত রয়েছেন কান্ট্রি ম্যানেজার জাফর শ্রাবণ।