ভাষা শহীদের শ্রদ্ধা জানালেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী
প্রতিবেদক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা:
যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ২১ ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাত ১২টা ১ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রথমেই শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি। তারপরই বেদিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুজনই সেখানে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করেন।
এরপর প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিপরিষদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে নিয়েও শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। পুষ্পমাল্য অর্পণ করেছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদও। মধ্যরাতে শহীদ মিনার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ঘিরে সাধারণ মানুষের ঢল নেমেছে। গোটা এলাকায় সুদৃশ্য আলপনা আঁকা হয়েছে।
১৯৫২ সালের এই দিনে ‘বাংলাকে’ রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে বাংলার (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) ছাত্র ও যুবসমাজসহ সর্বস্তরের মানুষ সে সময়ের শাসকগোষ্ঠীর চোখ-রাঙানি ও প্রশাসনের ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমে আসে। মায়ের ভাষা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে দুর্বার গতি পাকিস্তানি শাসকদের শঙ্কিত করে তোলায় সেদিন ছাত্র-জনতার মিছিলে পুলিশ গুলি চালালে সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিক গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী দলের নেতা বেগম রওশন এরশাদ এবং বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া পৃথক বাণী দিয়েছেন।
মাতৃভাষা আন্দোলনের ৬৫ বছর পূর্ণ হবে আগামীকাল। একুশে ফেব্রুয়ারি শোকাবহ হলেও এর যে গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় তা পৃথিবীর বুকে অনন্য। কারণ বিশ্বে এ যাবৎকালে একমাত্র বাঙালি জাতিই ভাষার জন্য জীবন দিয়েছে। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা (ইউনেসকো) ১৯৯৯ সালে মহান একুশের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি দেওয়ার পর থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও কয়েক বছর ধরে দিবসটি পালিত হচ্ছে। রাজধানী ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং বিভিন্ন স্থানে আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জাতি একুশের মহান শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে। ২১ ফেব্রুয়ারি জাতীয় ছুটির দিন। এদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি ভবনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে।