সোনালী ব্যাংকের ১২৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ !

নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: সোনালী ব্যাংকের খুলনা করপোরেট শাখা থেকে ১২৬ কোটির বেশি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মামলায় সোনালী ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক নেপাল চন্দ্র সাহা (তৎকালীন খুলনা করপোরেট শাখার উপমহাব্যবস্থাপক), ব্যাংকের খুলনা করপোরেট শাখার সাবেক উপমহাব্যবস্থাপক সমীর কুমার দেবনাথ, সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার শেখ তৈয়াবুর রহমান, সহকারী কর্মকর্তা কাজী হাবিবুর রহমান ও মেসার্স সোনালী জুট মিলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান এস এম এমদাদুল হোসেনকে আসামি করা হয়েছে।

আজ বুধবার দুপুরে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় খুলনার উপসহকারী পরিচালক মো. মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে খানজাহান আলী থানায় এ মামলা করেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামিরা তিন দফায় ৮৫ কোটি ৮০ লাখ ৬৯ হাজার ১৭৪ টাকা গ্রহণ করে এর বিপরীতে কোনো মালামাল না কিনে পরস্পর যোগসাজশে দুর্নীতি, প্রতারণা, অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ ও অসদাচরণের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন। এতে সরকারের বর্তমানে সুদাসলে মোট ১২৬ কোটি ৮২ লাখ ৯৩ হাজার ২৮২ টাকার আর্থিক ক্ষতিসাধন হয়েছে।

দুদক সূত্র জানায়, সমন্বিত জেলা কার্যালয় খুলনায় এ-সংক্রান্ত অভিযোগ অনুসন্ধানকালে ব্যাংক থেকে সংগৃহীত রেকর্ড পর্যালোচনা করে। তাতে দেখা যায়, ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সোনালী জুট মিলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান এস এম এমদাদুল হোসেন সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর তাঁর প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ঋণ মঞ্জুরের আবেদন করেন। সে সময় সোনালী জুট মিলস লিমিটেড খুলনায় উত্তরা ব্যাংক লিমিটেডে ঋণখেলাপি হয়ে ছিল। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পর্ষদের একটি কমিটি ২০১০ সালের জানুয়ারিতে সরেজমিন পরিদর্শন করে। তারা প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে শর্তসাপেক্ষ চলতি মূলধন বাবদ ২০ কোটি টাকা ঋণসীমার মঞ্জুরিপত্র দেয়। খুলনা করপোরেট শাখার তৎকালীন উপমহাব্যবস্থাপক নেপাল চন্দ্র সাহা শর্ত ভেঙে খুলনা ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের ক্রেডিট রেটিং সম্পাদন না করে ঋণের টাকা বিতরণ করেন।

এরপর বিভিন্ন সময়ে ২০১২ সাল পর্যন্ত নবায়ন আবেদন জানিয়ে ঋণসীমা বাড়িয়ে নেন সোনালী জুট মিলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান।

প্রধান অভিযুক্ত এস এম এমদাদুল হোসেন ওই ঋণের সুবিধা গ্রহণ করে ব্যাংকের ঋণ মঞ্জুরিপত্রের শর্ত মোতাবেক টাকা পরিশোধ করেননি। তিনি ওই ব্যাংকের সহকারী অফিসার কাজী হাবিবুর রহমান, সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার শেখ তৈয়াবুর রহমান ও সাবেক উপমহাব্যবস্থাপক সমীর কুমার দেবনাথের সঙ্গে যোগসাজশে ব্যাংকের অনুকূলে মর্টগেজ করা গোডাউন থেকে প্লেজ করা মালামাল অন্য জায়গায় সরিয়ে ফেলেন।

দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় খুলনার উপসহকারী পরিচালক মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, মোট তিন দফায় ৮৫ কোটি ৮০ লাখ ৬৯ হাজার ১৭৪ টাকা গ্রহণ করে এর বিপরীতে কোনো মালামাল না কিনে পরস্পর যোগসাজশে দুর্নীতি, প্রতারণা, অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ ও অসদাচরণের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন। এতে সরকারের বর্তমানে সুদাসল মিলিয়ে মোট ১২৬ কোটি ৮২ লাখ ৯৩ হাজার ২৮২ টাকার আর্থিক ক্ষতিসাধন হয়েছে। আজ মামলা হয়েছে। দুদক মামলাটি তদন্তের ব্যবস্থা করবে। তদন্তকালে অভিযোগের সঙ্গে অন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে আমলে আনা হবে।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ