পরিচালকের চাপেই ‘গোপন সংকেত’ ছাড়ল বাপ্পি

বিনোদন প্রতিবেদক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা:

বাপ্পি চৌধুরী। ২০১২ সালে নির্মাতা সাহিন সুমনের ভালোবাসার রঙ ছবির মাধ্যমে অভিষেক ঘটে রুপালী পর্দায়। এরপর থেকেই নবাগত ভদ্র অভিনেতা হিসেবে একাধিক চলচ্চিএে ব্যস্ত হয়ে পরেন তিনি। নারায়নগঞ্জের হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি পরিবারে তার জন্ম ।

সম্প্রতি নির্মাতা তাজুল ইসলামের গোপন সংকেত চলচ্চিএে শিডিউল ফাঁসানোর অভিযোগে আলোচনায় আসে বাপ্পি। এর আগেও এমন অভিযোগ শোনাগেছে তার বিরুদ্ধে। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান লাইফ টেকনোলজীর নির্মাতা অনন্যা মামুনও মামলা করেছিলেন বাপ্পির বিরুদ্ধে ।

ঢাকাই চলচ্চিএের বর্তমান অচলঅবস্থা কাটিয়ে উঠতে এই অঙ্গনের সংশ্লিস্টরা বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছে । কিন্তু বাপ্পির মত নায়কের আচারনকে অনেকটাই এই অগ্রগতিকে বাধা হিসেবেও মনে করেন। এখনই এ ধরনের বিষয়কে প্রতিহত করা না গেলে আগামীতে এই বিষয়টি অনেক বড় হয়ে দেখা দেবে।সমস্যায় পরবেন অনেক নির্মাতাই । এ ধরনের অভিমতও ব্যক্ত করেছেন চলচ্চিএ সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে বাপ্পির শিডিউল ফাঁসানোর বিষয়ে গত ১৮/০২/১৭ তারিখে বাংলাদেশ পরিচালক সমিতিতে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নির্মাতা তাজুল ইসলাম। এরপর ২৩/০২/১৭ তারিখে সমিতিতে হাজির থাকার কথা থাকলেও উপস্থিত হননি বাপ্পি। পরবর্তীতে পরিচালক সমিতির ২৮ ফেব্রুয়ারীর বৈঠকে বাপ্পির নেওয়া টাকা ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

এ প্রশঙ্গে নির্মাতা তাজুল ইসলাম জানান, সিনেমাটিতে বাপ্পি চৌধুরী ও রাফিয়া তিশা চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পর একাধিক গনমাধ্যমে সংবাদ প্রকশিত হয়। করা হয় ফটোশুট । গত বছরের ১১ জুলাই আমাদের আনুষ্ঠানিক ভাবেই বিএফডিসিতে শুটিং শুরু করার কথা ছিল। একই মাসের ১৩ তারিখ মাননীয় তথ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে মহরত অনুষ্ঠিত হওয়ার ব্যবস্থাও গ্রহণ করেছিলাম।

কিন্তু ৯ জুলাই গভীর রাতেই আমার ম্যানেজারকে ফোন করে শুটিং না করার কথা জানান বাপ্পি। আমি অনেক চেস্টার পরও তার সাথে যোগাকযোগ স্থাপন করতে পারিনি। পরে এর কারন সম্পর্কে জানাযায় সে মাহি অথবা পরীকে নায়িকা হিসেবে চায়। বিভিন্ন কারনে নির্মাতার আগ্রহ না থাকায় আবার ঐ মাসের ১২ তারিখে নির্মাতাকে ভালো কাজের কমিটমেন্ট দিয়ে পুনরায় কাজ করতে রাজি হয় বাপ্পি। কিন্তু এতদিনে বাপ্পির সাথে কাজ করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে নবাগত রাফিয়া তিশা । তার ভাষ্য মতে, ক্যরিয়ারের শুরুতের এমন হোচট মোটেও কাম্য নয়। তিসা বলেন, “আমি যে ভাবে আছি ভালো আছি।“ এরপর নায়িকা সংকটে পরলেও দ্বিপাক্ষিয় আলোচনায় প্রিয়া বিপাশাকে নেওয়ার কথা পাকা করার পর ফিটনেসের কারনে তাকে বাদ দেওয়া হয় ।

এক্ষেএে বাপ্পির সাথে আলোচনায় সেও কিছু নতুনদের ছবি পাঠায় এবং দেখতে বলে । ছবিটির মান ঠিক রাখতে সেই নতুনদের স্থান দিতে পারে নি নির্মাতা। সিনিয়রদের সহায়তায় তাজুল ইসলাম পরীমনিকেও নায়িকা হিসেবে নেওয়ার চেষ্টা করেন । কিন্তু শিডিউল না থাকায় সে চেস্টাও ব্যর্থ হয় নির্মাতার।

এ ভাবেই সর্বশেষে চলতি বছরের জানুয়ারীতে আলভিরা ইমুর সাথে চুক্তিবদ্ধের মাধ্যমে নায়িকা সংকটের অবসান হয়। ১০ ফেব্রুয়ারি আবার বিএফডিসিতে শুটিং শুরু করে বাপ্পি ও ইমুকে নিয়ে । কিন্তু ২দিন যেতে না জেতেই শুরু হয় নতুন নাটক । এবার আলভিরা ইমু প্রশঙ্গে বাপ্পি বলেন, ‘দুই দিন কাজ করার পর দেখলাম এই নায়িকার সঙ্গে কাজ করলে আমার ইমেজের ক্ষতি হবে।

এ প্রশঙ্গে নির্মাতা বলেন, বাপ্ির নিজের অভিনয়ের প্রতি বিশ্বাস নেই ! কারন অনেক স্বাদের ময়নার পর থেকে বিগ বাজেটের কোন ছবিতে তার সফলতা নেই । তাই পরীমনি ও মাহিয়া মাহির মত সফল নায়িকাদের কাধে ভঁর করাই তার মূল টার্গেট। সে নতুন নায়িকার সাথে কাজ করবে না , তা হলে মিসকল, সাদাকালো, আসমানি ও ১কোটি টাকা, নামক সিনেমায় কাদের সাথে অভিনয় করছে সে ? এবং আমাকেওতো একাধিক নতুনদের ছবি দিয়েছে। তাদের না নেওয়ার কারনেই এমন আচারন করছে তিনি। তার এই আচারনের কারনে পুরো ইউনিট ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে । আগ্রহ হারাচ্ছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান।

দুঃখ জনক হলেও সত্যি কথা, যারা চলচ্চিএে কাজ করছে তারাই কেবল জানে কত কষ্ট করে ম্যানেজ করতে হয় প্রযোজককে। কারন বর্তমানে কেউই বলতে পারে না তার লগ্নি করা টাকা ফিরে আসবে কি না ! এ অবস্থায় যদি বাপ্পির কাছ থেকেও এমন ফিট ব্যক পেতে হয়, তা হলে আমার কোথায় যাব !

এদিকে এসব অভিযোগের সাথে একমত না হয়ে বাপ্পি জানান, চলচ্চিএটিতে কাজের শুরু থেকেই আমার কোন কথা রাখেনি পরিচালক। তিনি আমাকে অনেক মানুষিক প্রেসারে রেখেছেন। তারপরও সর্বশেষ আলভিরা ইমুকে নিয়ে দুদিন ভালই কাজ করেছি। কিন্তু পরে জানতে পারি ইমুকেও কয়েকদিনপর বাদ দিয়ে দিবে। তাই পরিবেশের কথা বিবেচনা করে আমিও এই চলচ্চিএটিতে কাজ করার আগ্রহ হারাই। নতুন নায়িকাদের সাথে কাজ করা প্রসঙ্গে বাপ্পি বলেন, আমার নতুনদের সাথে কাজ করতে সমস্যা নেই। কিন্তু আমার সাথে তাদের ম্যাচিংতো হতে হবে।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ