জঙ্গি আস্তানার কাছে বিস্ফোরণে পুলিশসহ নিহত ৪
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: সিলেট মহানগরের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকায় সন্দেহভাজন জঙ্গি আস্তানা ‘আতিয়া মহল’ ঘিরে অভিযান চলাকালে শনিবার সন্ধ্যা ও রাতে দুই দফা বোমা বিস্ফোরণে পুলিশসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত ৪৩ জনকে সিলেট এম এ জি ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ওসমানী হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. রুহুল আমিন বলেন, দুই দফা বিস্ফোরণে আহতদের মধ্যে এখন হাসপাতালে ৪৩ জন আছেন। এ ঘটনায় নিহত চারজনকে মৃত অবস্থায় এই হাসপাতালে আন হয়। তিনি বলেন, বিস্ফোরণে আহত লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুল কালাম আজাদকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আহতদের মধ্যে একজনক একটি বেসরকারি হাসপাতালে চলে গেছেন। রুহুল আমিন জানান, বিস্ফোরণের ঘটনার পর হাসপাতালের সবার ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
ওসমানী হাসপাতালের উপপরিচালক দেবপদ রায় বলেন, তাদের হাসপাতালে চারজনের মরদেহ আছে। এর মধ্যে একজন পুলিশ কর্মকর্তা ও তিনজন বেসামরিক নাগরিক।
এর আগে রাত পৌনে ১০টার দিকে সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) আকতারুজ্জামান বসুনিয়া একজন পরিদর্শকসহ দুজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।
নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। একজন হলেন সিলেট মহানগর পুলিশের পরিদর্শক চৌধুরী মো. আবু ফয়সাল। আরেকজনের নাম ওয়াহিদুল ইসলাম অপু (২৬)। তাঁর বাড়ি চাঁদনীঘাটে। তিনি মদনমোহন কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র বলে জানিয়েছেন তাঁর বন্ধু জয়শর্মা চৌধুরী। বন্ধুর ভাষ্য, দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে ওয়াহিদুল সবার বড়। অপরজন হলেন শহীদুল ইসলাম (২৮)। তিনি নেত্রকোনার পূর্বধলার ইছুলিয়া গ্রামের ব্যবসায়ী বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
আহতদের মধ্যে পুলিশসহ অন্তত ৪০ জন সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে। এর মধ্যে বেসামরিক নাগরিক শিরিন মিয়া, জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ও দক্ষিণ সুরমা থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) জনি লাল দের অবস্থা আশঙ্কাজনক। গুরুতর আহতদের মধ্যে র্যাবের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আবুল কালাম আজাদকে রাত সাড়ে ১০টার দিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় পাঠানো হয় বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে এবং পুলিশ ও সোয়াটের সহায়তায় চলা ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ নিয়ে শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ব্রিফিং করা হয়। ব্রিফিং শেষ হওয়ার কয়েক মিনিট পর সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে ব্রিফিংস্থলের কাছে বোমা বিস্ফোরণের ঘটে। এতে সাংবাদিকসহ ৩০ জনের বেশি আহত হন। এরপর রাত সাতটা ৫৫ মিনিটের দিকে আগের ঘটনাস্থলের কাছে পূর্ব পাঠানতলা মসজিদ এলাকায় আরেকটি বোমার বিস্ফোরণ হয়। ওই বিস্ফোরণের ঘটনায় পুলিশ সদস্যসহ হতাহতের ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে একটি মোটরসাইকেলে করে দুই যুবক ব্রিফিংস্থলের কাছাকাছি পৌঁছান। তখন বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে দুই যুবক ছিটকে পড়েন। এরপর আরেকটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। যুবকদের সঙ্গে রাখা ব্যাগে বোমা ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।