আসামি জেলে হলেও ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী

 

প্রতিবেদক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকঃ রাজধানীর পূর্ব বাসাবো এলাকায় স্কুলছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে সবুজবাগ থানায় দায়ের করা মামলায় স্থানীয় আওয়ামী লীগনেতা মাসুদ পারভেজ আকন্দ এখন জেলে। অভিযুক্ত আসামি জেলে থাকলেও ঘটনার শিকার মেয়েটি ও তার পরিবার আতঙ্কে থাকায় একাবাসী তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। আজও তারা বিশাল মানববন্ধন ও বিক্ষোপ করেছে অপরাধীর শাস্তির দাবিতে।

প্রধানমন্ত্রী ও স্থানীয় সাংসদের স্থক্ষেপ কামনা করেছে শিক্ষার্থীরা। এদিকে পর পর দুইবার আসামির পক্ষে জামিন আবেদন করা হলেও সেই আবেদন নাকচ করেছেন আদালত। দ্বিতীয় দফায় গত বৃহস্পতিবার ২৩ মার্চ আসামির পে জামিন আবেদন করা হলে আদালত তা নাকচ করেন।

এর আগে সোমবার আসামিকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সবুজবাগ থানার এসআই ৭ দিনের রিমান্ড চান। আসামিপ রিমান্ড আবেদন বাতিল করে জামিন চায়লে। ঢাকার মহানগর হাকিম দেলোয়ার হোসেন উভয় পরে বক্তব্য শুনে রিমান্ড ও জামিনের আবেদন নাকচ করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। জানা যায়. মেয়েটি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ২২ ধারায় স্বিকারোক্তিমূলক জবান বন্দি দিয়েছে।

এদিকে, এ ঘটনায় একালাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। কয়েক দফা তারা ক্ষমতাসীন দলের নেতার এ নেক্কার জনক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে মানববন্ধনসহ বিক্ষোভ করছে। কোমল মতি শিক্ষার্থীরাও মানববন্ধনে অংশ নিচ্ছে। কদমতলা পূর্ব বাসাবো স্কুল এন্ড কলেজের অভিভাবকদের ভেতর ভয়ের শঙ্কা কাজ করছে। তারা এ ঘটনার সুষ্টু বিচার দাবি করছে। জানা যায়, মেয়েটির বাবা বেঁচে নেই। শ্লীলতাহানীর শিকার মেয়েটির পরিবার আতঙ্কে রয়েছে। আসামি জেলের ভেতর থাকলেও তার অনুসারিরা মেয়েটির বাসার সামনে প্রতিনিয়ত নজরধারী করছে। এ ঘটনায় স্কুল কমিটির কাছে ভিডিও ফুটেজও রয়েছে প্রমাণ স্বরূপ। রিমান্ড শুনানিতে উকিলকে যথাযথ সময় না পাওয়ায় আদালত অভিযোগকারী মেয়ের অনুপস্থিতে রিমান্ড আবেদন বাতিল করেন। এ ঘটনার পর স্কুলের অন্যান্য শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মাঝে তাদের সন্তানদের নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। জানা যায়, এ ঘটনার পর মেয়েটি মানসিকভাবে ভেঙ্গে পরেছে।

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, এ আসামির বিরুদ্ধে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। পূর্বেও এ আসামি এরূপ ঘটনা ঘটিয়েছেন। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে, প্রকৃত রহস্য উদঘাটন ও তার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের জন্য ৭ দিনের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।

আসামি প্রভাবশালী, তাকে জামিন দিলে মামলার তদন্তে বিঘ্ন ঘটতে পারে। তাকে জামিন না দিয়ে রিমান্ড দেওয়া প্রয়োজন। বাদিপরে আইনজীবী এড.সেলিনা জামিন বাতিল চেয়ে বলেন, ‘মাসুদ পারভেজ স্কুলের গভর্নিং বডির সদস্য। প্রকৃত রহস্য উদঘাটন ও তার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের জন্য ৭ দিনের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন। আসামি প্রভাবশালী, তাকে জামিন দিলে মামলার তদন্তে বিঘ্ন ঘটতে পারে। তাকে জামিন না দিয়ে রিমান্ড দেওয়া প্রয়োজন।

অন্যদিকে ঢাকা বারের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইসলাম বাচ্চু আসামিপক্ষে আইনজীবী লড়ছেন।

আজিজুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, মাসুদ পারভেজ স্কুলের গভর্নিং বডির সদস্য। পাশাপাশি তিনি ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তার খ্যাতিতে ঈর্ষান্বিত হয়ে গভর্নিং বডির সদস্যরা এবং অন্যরা মিলে তাকে ফাঁসিয়েছে। তিনি পরিস্থিতির শিকার। তাকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতে ফাঁসানো হয়েছে। তাই তার রিমান্ড আবেদন নাকচ করে জামিন দেওয়া প্রয়োজন।

উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ কদমতলা পূর্ব বাসাবো স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে স্কুলের এক নারী স্টাফ জানান, মাসুদ পারভেজ তাকে ডেকেছেন। পরে ভিকটিম আসামির সঙ্গে দেখা করেন। আসামি তাকে সাজেশন দেওয়ার কথা বলে তার ব্যক্তিগত অফিসে নিয়ে যান এবং শ্লীলতাহানি করেন।

পরে ওই ছাত্রী চিৎকার দিয়ে দৌঁড়ে সেখান থেকে পালিয়ে আসে। ওই ঘটনায় ভিকটিম নিজে বাদী হয়ে গত ১৮ মার্চ সবুজবাগ থানায় মামলাটি দায়ের করে। এরপর ১৯ মার্চ দুপুরে মাসুদ পারভেজকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় মাসুদ পারভেজ আকন্দকে বহিস্কার করা হয়েছে গভনিং বডির সদস্য পদ থেকে।

 

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ