শেষ হলো অপারেশন টোয়াইলাইট
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: শেষ হলো ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’। এর মধ্য দিয়ে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকায় আতিয়া মহলে টানা ১১১ ঘণ্টার অভিযান শেষ হলো। ভবনটি পুলিশের তত্ত্বাবধানে দেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার রাতে সিলেটের জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্টে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ অভিযানের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণার কথা জানান সেনা গোয়েন্দা পরিদপ্তরের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসান।
ফখরুল আহসান বলেন, ওই ভবনে দুজনের শরীরে সুইসাইডাল ভেস্টের (আত্মঘাতী হামলার জন্য বিস্ফোরকভর্তি বন্ধনী) বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। ভবনটি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সিলেটের আতিয়া ভবনটি এখনো নিরাপদ নয়। সেখানে বিস্ফোরক থাকতে পারে। সেখানে আরও তল্লাশি চালানো হবে। অভিযানের কারণে ভবনটি নড়বড়ে হয়ে গেছে।
সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকায় আতিয়া মহলের অভিযানকে জাতীয় দুর্যোগে সামরিক ও বেসামরিক মেলবন্ধনের অপূর্ব উদাহরণ বলে উল্লেখ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
আজ সকালে আতিয়া মহলে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো দল অভিযান চালায়। সেখানে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে ওই ভবনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকা বিস্ফোরক দ্রব্য শনাক্ত ও নিষ্ক্রিয় করা হয়। সেনাবাহিনীর দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, আতিয়া মহলের যেখানে-সেখানে অবিস্ফোরিত অবস্থায় হাতে তৈরি গ্রেনেড ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। এ ধরনের গ্রেনেড খুব বিপজ্জনক। বিশেষ করে যদি পিন খোলা অবস্থায় কোনো গ্রেনেড পড়ে থাকে, তাহলে যেকোনো সময় বিস্ফোরিত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে সেগুলো শনাক্ত ও উদ্ধার করা জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে।
সকাল থেকে আতিয়া মহলে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো দলের অভিযান চলে। বেলা একটার দিকে চারটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। বিকেল চারটা ৪০ মিনিট ও পাঁচটার দিকে আরও দুটি বিস্ফোরণ শোনা যায়। এ সময় ধোয়া দেখা গেছে।
আতিয়া মহলের আশপাশের এলাকায় কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা রয়েছে। আতিয়া মহল ঘিরে তিন বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে সাধারণের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
সেনাবাহিনী আজ জানায়, আতিয়া মহল থেকে চারটি মৃতদেহ বের করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের কর্মকর্তারা জানান, নিহত চারজনের মধ্যে একজন মাঈনুল ইসলাম ওরফে মুসা। তাঁরা জানান, মুসা যে ছবি দিয়ে বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন, সেই ছবির সঙ্গে পুলিশের কাছে থাকা ছবির মিল দেখে তাঁরা পরিচয় নিশ্চিত হয়েছেন।
আতিয়া মহল নামের পাঁচতলা এই বাড়ি গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটায় ঘিরে ফেলে পুলিশ। গত শুক্রবার ঢাকা থেকে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট সোয়াট গিয়ে অভিযানে অংশ নেয়। এরপর গত শনিবার সকাল থেকে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো দল ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ নামে অভিযান শুরু করে। এই অভিযানের মধ্যেই শনিবার সন্ধ্যায় দুই দফা বিস্ফোরণে দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ছয়জন নিহত এবং আরও ৪৪ জন আহত হন।