বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য সরালে পশ্চিমবঙ্গ মৌলবাদের মুক্তাঞ্চল হবে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: কলকাতার বেকার হোস্টেল থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আবক্ষ ভাস্কর্য সরানোর দাবির বিরোধিতায় এবার মাঠে নেমেছে ‘প্রগতিশীল মুসলিম সমাজ’ নামের একটি সংগঠন। এই সংগঠনের আয়োজনে এক সেমিনারে বক্তারা বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য সরানো যাবে না। ভাস্কর্য সরালে পশ্চিমবঙ্গ ধর্মীয় মৌলবাদের মুক্তাঞ্চল হয়ে যাবে।
বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্য সরানোর দাবির বিরোধিতা করে গতকাল বুধবার বিকেলে কলকাতা প্রেসক্লাবে ওই সেমিনারের আয়োজন করা হয়। আয়োজনের সহযোগিতায় ছিল কলকাতার বাংলার মুখ, অনীশ সাংস্কৃতিক পরিষদ, সর্বভারতীয় বাংলা ভাষা মঞ্চ ও আমরা সংগঠন।
সেমিনারে বক্তারা ভাস্কর্য সরানোর দাবি নাকচ করেন। একই সঙ্গে যারা ভাস্কর্য সরানোর কথা বলছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপিকা সৈয়দ তানভির নাসরিন, কাজী মাসুম আখতার, সুরেশ কণ্ডু প্রমুখ।
বক্তারা স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, বেকার হোস্টেল থেকে কোনোভাবেই বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্য সরানো চলবে না। ভাস্কর্য যথাস্থানেই থাকবে। এর ব্যত্যয় হলে পশ্চিমবঙ্গ ধর্মীয় মৌলবাদের মুক্তাঞ্চল হয়ে যাবে।
বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলা ভাষার ওপর একটি দেশ সৃষ্টি করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি মিলেমিশে আছে। এই সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনকে টিকিয়ে রাখতে বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্য সরানো চলবে না। কারণ, বঙ্গবন্ধু বাঙালির হৃদয়ে চিরভাস্বর। তিনি বাঙালির নয়নমণি।
আয়োজক সংগঠনের নেতা কাজী মাসুম আখতার বলেন, বেকার হোস্টেল থেকে বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্য সরাতে যারা দাবি করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
বেকার হোস্টেল থেকে বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্য সরানোর দাবি তুলেছে পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশন। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ কামরুজ্জামান দাবি পূরণ করতে সরকারকে সময়ও বেঁধে দিয়েছেন।
তবে এই দাবি নাকচ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, বঙ্গবন্ধু দুই বাংলার প্রেরণা। তাঁর ভাস্কর্য সরানোর প্রশ্নই ওঠে না। কেউ প্রতিবাদ করতে চাইলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বেকার হোস্টেল একটি সরকারি ছাত্রাবাস। বঙ্গবন্ধু কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে পড়ার সময় এই বেকার হোস্টেলে ছিলেন ১৯৪৫-৪৬ সালে। ১৯৯৮ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগে বেকার হোস্টেলের ২৩ ও ২৪ নম্বর কক্ষ নিয়ে গড়া হয় বঙ্গবন্ধু স্মৃতিকক্ষ। সেখানেই স্থাপন করা হয় বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্য।