ডুবেছে এম ভি গ্রীন লাইনের একাংশ
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: ঢাকা-বরিশাল পথে চলাচলকারী দ্রুতগামী জলযান এম ভি গ্রীন লাইন-২ (ওয়াটার ওয়েজ) এর সঙ্গে সংঘর্ষে ডুবে যাওয়া পাথর বোঝাই কার্গোর সন্ধান মেলেনি। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) বরিশাল অঞ্চলের উদ্ধার যান ‘নির্ভীক’ নিয়ে উদ্ধারকারী দল দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে উদ্ধার অভিযান চালাতে পারছেন না তাঁরা। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএর বরিশাল অঞ্চলের উপপরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান রাত সাড়ে নয়টার দিকে বলেন, আবহাওয়া খুব খারাপ। উদ্ধার অভিযান শুরু করা যাচ্ছে না। আর কার্গোটি কোথায় তাও নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। নদী উত্তাল থাকায় ডুবুরিরাও নদীতে নামতে পারছেন না। তা ছাড়া ডুবে যাওয়া কার্গোটি পাথর ভর্তি থাকায় সেটি খুব ভারী হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উদ্ধারকারী যান ‘নির্ভীক’ সেটি উদ্ধারে সক্ষম হবে কিনা সে বিষয়ে কাল আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তলা ফেটে যাওয়া এম ভি গ্রীন লাইনের সামনের অংশ চরে উঠে থাকায় এর পেছনের অংশের প্রায় পুরোটাই পানিতে নিমজ্জিত হয়ে ঝুলে রয়েছে। তবে এটি পুরোপুরি নিমজ্জিত হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই।
আজ শনিবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া এলাকা সংলগ্ন কীর্তনখোলা নদীতে দুর্ঘটনাটি ঘটে। কার্গোটি ঢাকা থেকে বরিশালের দিকে আসছিল। অপরদিকে বিকেল তিনটায় যাত্রী নিয়ে বরিশাল থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল এম ভি গ্রীন লাইন-২। এটি চরবাড়িয়ার ভাঙন কবলিত এলাকা পার হওয়ার সময় বিপরীত দিক থেকে আসা কার্গোটির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে কার্গোটি ডুবে যায়।
সংঘর্ষে গ্রীন লাইনের সামনের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয় ও তলা ফেটে যায়। তলা ফেটে পানি উঠতে থাকলে ভেতরে থাকা যাত্রীরা আতঙ্কে চিৎকার শুরু করেন। একপর্যায়ে জলযানটি চরবাড়িয়া এলাকায় ভিড়িয়ে যাত্রীদের কিনারে নামিয়ে দেয়। তবে তলা ফেটে যাওয়ায় জলযানটি ক্রমশ ডুবে যেতে থাকে।
গ্রীন লাইনের পরামর্শক (প্রশাসন) শামসুল আরেফিন রাত আটটার দিকে বলেন, ‘ওই এলাকাটি বিপজ্জনক হওয়ায় সব সময়ই জায়গাটি পার হওয়ার সময় আমাদের জাহাজের গতি কম থাকে। আজও কম গতিতে ওই এলাকা অতিক্রম করছিল আমাদের জাহাজ। পাথর বোঝাই কার্গোটিকে দূর থেকেই আমাদের জাহাজের মাস্টার মাইকে বারবার সতর্ক করে। কিন্তু কার্গোটির চালক তা উপেক্ষা করায় সংঘর্ষ হয়।’
শামসুল আরেফিন আরও বলেন, ‘শত্রুতাবশত ও পরিকল্পিতভাবে এমনটা করা হয়েছে বলে আমাদের সন্দেহ। গ্রীন লাইনের পেট বরাবর আঘাতটি লাগলে জানমালের অনেক ক্ষতি হতো। এখন জাহাজ ও ইঞ্জিনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও যাত্রীদের কোনো ক্ষতি হয়নি।’
এদিকে এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. জাকির হোসেনকে প্রধান করে এই কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), নৌ পুলিশের প্রতিনিধি, বিআইডব্লিউটিএ’র প্রতিনিধি এবং ফায়ার সার্ভিসের একজন প্রতিনিধি। জেলা প্রশাসক গাজী মো. সাইফুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।