উত্তর কোরিয়াকে বশে আনতে যুক্তরাষ্ট্রের নয়া চাল
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: উত্তর কোরিয়ায় আরও কঠিন অবরোধ আরোপ করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। লক্ষ্য পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনায় বসতে উত্তর কোরিয়াকে বাধ্য করা।
হোয়াইট হাউসে গতকাল বুধবার সিনেটরদের ব্রিফিংয়ের শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বন্ধু দেশ এবং আঞ্চলিক অংশীদারদের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার ব্যাপারে কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিতে চান।
পেন্টাগন–প্রধান জেমস ম্যাটিস, পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন ও জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক ড্যান কোট এক বিবৃতিতে জানান, চাপ প্রয়োগ করে উত্তর কোরিয়াকে আলোচনার পথে ফেরাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্বশীল সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।
এর আগে প্যাসিফিক কমান্ডের প্রধান অ্যাডমিরাল হ্যারি হ্যারিস পিয়ংইয়ং এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে উত্তেজনা নিরসনে বেইজিংয়ের নেওয়া পদক্ষেপকে স্বাগত জানান। এ ক্ষেত্রে তিনি বেসামরিক উপায়ে সমাধানের প্রস্তাব করেন।
ওয়াশিংটনে হ্যারিস বলেন, ‘সব ধরনের বিকল্পই রয়েছে। আমরা চাই উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সুবুদ্ধি হোক।’
যুক্তরাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ এক কূটনীতিক বলেন, হোয়াইট হাউসে গত সোমবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজের সময় ট্রাম্প স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, পিয়ংইয়ংয়ের লাগাম চীন ধরতে না পারলে সামরিক পথেই এর সমাধান করবে যুক্তরাষ্ট্র। ওই কূটনীতিক আরও জানান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এইচ আর ম্যাকমাস্টার ১৫ জন প্রতিনিধিকে বলেন, উত্তর কোরিয়া আলোচনায় রাজি না হলে সামরিকভাবেই সংকটের সমাধান করা হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কূটনীতিক বলেন, ‘আমরা চীনের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ ও রাজনৈতিকভাবে উত্তর কোরিয়া সংকটের সমাধান করতে চাই। তবে যদি তা না হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক পথেই সমাধানের দিকে এগিয়ে যাবে।’
প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, সন্ত্রাসের মদদদাতা দেশের তালিকায় উত্তর কোরিয়াকে অন্তর্ভুক্ত করার কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র।
উত্তর কোরিয়া এ পর্যন্ত পাঁচটি পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে। মনে করা হয়, দেশটি যুক্তরাষ্ট্র পর্যন্ত পৌঁছাতে সক্ষম—এমন দূরপাল্লার পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে। এ হামলার আশঙ্কা থেকে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র-উত্তর কোরিয়ার সম্পর্ক উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। কূটনৈতিক চাপের পাশাপাশি কোরীয় উপদ্বীপে যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।
এদিকে দক্ষিণ কোরিয়ায় পারমাণবিক শক্তিসম্পন্ন ডুবোজাহাজ পাঠানোর পরদিনই গতকাল আলোচিত ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ‘থাড’ স্থাপনের কাজ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। থাড হচ্ছে টিএইচএএডি বা ‘টার্মিনাল হাই-অলটিচিউড এরিয়া ডিফেন্স’ কথাটির সংক্ষেপ। এটি শত্রু ক্ষেপণাস্ত্র আকাশেই ধ্বংস করার একটি ব্যবস্থা।
আঞ্চলিক পরাশক্তি ও উত্তর কোরিয়ার মিত্র চীন শুরু থেকে সে দেশের সীমান্তের এত কাছে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা স্থাপনের বিরোধিতা করে আসছে। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, থাড এই অঞ্চলের নিরাপত্তাব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করবে।