বিমান চলাচলে বিঘ্ন ঘটালে মৃত্যুদণ্ড
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: নির্বিঘ্নে বিমান পরিচালনায় অসুবিধা সৃষ্টি করে মানুষের জীবন ঝুঁকিতে ফেললে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি পাঁচ কোটি টাকা জরিমানার বিধান রেখে নতুন আইনের খসড়া জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে।
আজ বুধবার জাতীয় সংসদে ‘বেসামরিক বিমান চলাচল আইন-২০১৭’ বিলটি উত্থাপন করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। বিলটি পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি খসড়া আইটিতে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। এর আগে গত বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি বেসামরিক বিমান চলাচল আইনের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছিল মন্ত্রিসভা। ১৯৬০ সালের ‘দ্য সিভিল এভিয়েশন অরডিন্যান্স’ রহিত করে নতুন আইন করতে বিলটি আনা হয়েছে।
বিলে বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি এমন কোনো কাজ করেন, যাতে নির্বিঘ্নভাবে বিমান পরিচালনায় অসুবিধার সৃষ্টি হয় এবং মানুষের জীবন ঝুঁকির সম্মুখীন হয়, তবে তা অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। বিমান চালানোর অনুমতির বিধান লঙ্ঘন বা সনদ জাল করলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে প্রস্তাবিত আইনে। বিমানের নেভিগেশনের সঠিক আলো ও সংকেতের কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, পাঁচ কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডই হতে পারে।
বিলে আরও বলা হয়, কেউ দুর্ঘটনায় পড়া বিমানের যন্ত্রাংশ বা অন্য কোনো কিছু সরিয়ে ফেললে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড এবং অপসারিত যন্ত্রাংশের দ্বিগুণ মূল্যে অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। কেউ বিমান ভ্রমণের সময় ‘ইচ্ছাকৃতভাবে’ বিপজ্জনক পণ্য বহন করলে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ডের সঙ্গে ৫০ লাখ টাকা জরিমানার মুখে পড়বেন বলে বিলে বিধান রাখা হয়েছে। এ ছাড়া অবৈধভাবে বাংলাদেশের আকাশসীমায় প্রবেশের জন্য তিন থেকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা জরিমানা গুনতে হবে।
প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছ, কোনো এয়ার অপারেটর রেকর্ড সংরক্ষণ না করলে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড অথবা ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
বিলে বলা হয়েছে, যদি কোনো পাইলট বা দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি ভূমি বা পানিতে অবস্থানকারী কোনো ব্যক্তি বা সম্পত্তির ওপর দিয়ে বিমান বিপজ্জনক পদ্ধতিতে চালনা করেন এবং তিনি যদি প্রমাণ করতে ব্যর্থ হন যে ওভাবে বিমান চালানোয় তাঁর প্রত্যক্ষ ত্রুটি বা ব্যর্থতার কারণে হয়নি, তবে ওই পাইলটের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং সর্বোচ্চ পাঁচ কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, ১৯৬০ সালের অধ্যাদেশটি বাতিল করে বাংলায় নতুন আইন করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল-সংক্রান্ত কনভেনশন বাস্তবায়নের জন্য নতুন আইনে কিছু বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
আজ সংসদে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট বিল, ২০১৭ পাস হয়েছে। বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী।
সামরিক আমলে জারি করা বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট-সংক্রান্ত অধ্যাদেশ রহিত করে নতুন আইন করতে সংসদে বিলটি পাস হয়েছে। গত ৩০ জানুয়ারি বিলটি সংসদে তোলেন কৃষিমন্ত্রী। পরে বিলটি পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।