দেশ বিক্রির চুক্তির অভিযোগ সম্পূর্ণ অসত্য: প্রধানমন্ত্রী
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভারত সফরের সময় যেসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে, তার সব কটির শিরোনাম গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। কোনো চুক্তি বা সমঝোতা স্মারকই দেশের স্বার্থবিরোধী নয়। এ ধরনের বিবৃতি সম্পূর্ণ অসত্য, মনগড়া, অবিবেচনাপ্রসূত এবং বাংলাদেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা মাত্র।
আজ বুধবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। ফজিলাতুন নেসা বাপ্পি প্রধানমন্ত্রীর কাছে তারকাচিহ্নিত প্রশ্ন করে জানতে চেয়েছিলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ৭ থেকে ১০ এপ্রিল ভারত সফরের সময় দেশ বিক্রি করার চুক্তি হয়েছে বলে যে অভিযোগ করছেন, তা সত্য কি না। এ প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরের বিস্তারিত তুলে ধরে এ কথা বলেন।
সম্পূরক প্রশ্নে ফজিলাতুন নেসা বাপ্পি জানতে চান, প্রতিরক্ষাবিষয়ক চুক্তির ক্ষেত্রে ভারত ছাড়া বিশেষ করে চীনের সঙ্গে কোনো চুক্তি আছে কি না। এ প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চীন, রাশিয়া, কুয়েত, কাতারসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গেই এ ধরনের চুক্তি আছে। বিএনপি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় চীনের সঙ্গে চুক্তি করে, তবে বাংলাদেশের কাউকে তা জানতে দেয়নি। সংসদে তা জানিয়েছিল কি না জানা নেই। অন্যান্য চুক্তি নিয়ে সংসদে নোটিশ দেওয়া হলে সব কটি চুক্তি সম্পর্কে জানাবেন বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
গোলাম দস্তগীর গাজী সম্পূরক প্রশ্নে জানতে চান, সম্প্রতি ঢাকায় অনুষ্ঠিত ১৩৬তম আইপিইউ সম্মেলন সফলভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ায় বাংলাদেশের অর্জনটা কী হলো? এ প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ ধরনের সম্মেলন সফল করার পর ২০১৪-এর নির্বাচন নিয়ে দেশে যারা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে চায়, তাদের ঘটে পানি আসা প্রয়োজন। এ ধরনের প্রশ্ন করলে জনগণ তাদের অর্বাচীন মনে করবে। তাদের পার্লামেন্টারি প্র্যাকটিস সম্পর্কে ধারণা নেই বলেই জনগণ ভাববে। তাই যাঁরা প্রশ্ন তোলেন, তাঁরা এ ধরনের প্রশ্ন আর করবেন না। দেশে গণতন্ত্র আছে, সফল নির্বাচন হয়েছে। গণতন্ত্র অব্যাহত আছে।’
ময়মনসিংহের সাংসদ ফখরুল ইমাম সম্পূরক প্রশ্নে তাঁর শৈশবের সুখ, শান্তি ফেরত চান। এর উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেঘে মেঘে বেলা অনেক হয়েছে। শৈশবের স্মৃতি রোমন্থন করা যায়, শৈশবে ফিরে পাওয়া যায় না।
জঙ্গিবাদ দমনে সরকার কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে, আখতার জাহানের প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণে আছে। সমাজে সবক্ষেত্রে শান্তি-শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করছে। সরকার জঙ্গিবাদ দমনে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। বিশ্বে বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত। জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় এ পর্যন্ত সাতটি সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
মো. মনিরুল ইসলাম দেশের বিচারব্যবস্থা এবং জনগণের সঠিক ও দ্রুত বিচার পাওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে দেশে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জিত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় ২০ জন নিকাহ রেজিস্ট্রারের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া ৬৭ জন নিকাহ রেজিস্ট্রার এবং ১৪ জন হিন্দু বিবাহ নিবন্ধক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।