শয়নকক্ষে মা-মেয়ের লাশ
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলায় মা-মেয়ের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতরা হলেন নাজমা খাতুন (৪০) ও তাঁর মেয়ে জোসনা খাতুন। নাজমার স্বামী আবদুর রফিক তাঁদের হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর থেকে রফিক পলাতক। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার টাঙ্গালিয়া পাড়া গ্রামে নাজমার বাবার বাড়ির শয়নকক্ষ থেকে তাঁদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ওই দুজনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে তারা ধারণা করছে।
নাজমার স্বজনদের অভিযোগ, নাজমার দ্বিতীয় স্বামী আবদুর রফিক গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে ঝড়ের সময় তাঁদের হত্যা করে পালিয়ে যান।
পুলিশ, নাজমার পরিবার ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নাজমার বাড়ি উপজেলার টাঙ্গালিয়া পাড়া গ্রামে। তাঁর মেয়ে জোসনা স্থানীয় বদরপুর দাখিল মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ছিল। নাজমার প্রথম বিয়ে হয় পাশের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার ডাংধরা ইউনিয়নে গাড়োহাড়ি গ্রামের জয়নাল আবেদিনের সঙ্গে। ওই দম্পতির ঘরে জোসনার জন্ম হয়। একপর্যায়ে যৌতুকের জন্য ঘর ছাড়তে হয় নাজমাকে। এরপর থেকে নাজমা তাঁর মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়িতেই থাকতেন। পরে ৩ বছর আগে নাজমার দ্বিতীয় বিয়ে হয় একই উপজেলার বদরপুর নয়াপাড়া গ্রামের আবদুস সাত্তারের ছেলে আবদুর রফিকের সঙ্গে। দ্বিতীয় বিয়ের পরও নাজমা তাঁর বাবার বাড়িতেই থাকতেন। রফিকের ঘরে প্রথম স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে।
নাজমা খাতুনের মা রাবেয়া বেগম অভিযোগ করে বলেন, আগের স্বামী যৌতুকের টাকা না পেয়ে নাজমাকে তাড়িয়ে দেয়। দ্বিতীয় স্বামী আবদুর রফিক আমাদের বাড়িতেই আসা যাওয়া করে। নাজমা দিনমজুরির কাম করে। কিন্তু রফিক টাকার জন্য বাড়িতে এসে প্রায়ই নির্যাতন চালায়। বুধবার সন্ধ্যায় রফিক এ বাড়িতে আসে। তাঁদের মধ্যে ঝগড়াও হয়। রাতে তারা একসঙ্গেই ছিল। সকালে দেখি মা ও মেয়ের লাশ। দুজনকে খুন করে জামাই পালিয়ে গেছে।
রাবেয়া বেগম আরও বলেন, ‘ওই রাতে কালবৈশাখী ঝড় হয়। ঝড়ের সময় তাদের হত্যা করে রফিক। আমরা কিছুই বুঝতে পারিনি।’
রাজীবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পৃথীশ কুমার সরকার জানান, মা-মেয়েকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে। লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় রফিককে আসামি করে মামলা করেছেন নাজমার ভাই রফিকুল ইসলাম।