অভিযোগ গঠন ২৩ মে
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: সিলেটের বিজ্ঞানবিষয়ক লেখক ও ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ হত্যা মামলায় ছয়জনকে অভিযুক্ত করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সম্পূরক অভিযোগপত্র (চার্জশিট) আজ মঙ্গলবার গ্রহণ করেছেন আদালত। ২৩ মে অভিযোগ গঠনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার হওয়া ১০ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
সিলেটের মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আকবর হোসেন মৃধা এ আদেশ দেন। ওই আদালতের সরকারি কৌঁসুলি মফুর আলী বলেন, অভিযোগপত্র গ্রহণ করে অভিযোগ গঠনের তারিখ ঠিক হওয়ায় এ মামলার বিচারপ্রক্রিয়া শুরু নিশ্চিত হলো।
সম্পূরক অভিযোগপত্রে অভিযুক্ত ছয়জন হলেন সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার ফালজুর গ্রামের আবুল হোসেন ওরফে আবুল হুসাইন (২৫), খালপাড় তালবাড়ির ফয়সাল আহমেদ (২৭), সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বীরেন্দ্রনগর (বাগলী) গ্রামের হারুন অর রশিদ (২৫), কানাইঘাটের পূর্ব ফালজুর গ্রামের মান্নান ইয়াহিয়া ওরফে মান্নান রাহি (২৪), ফালজুর গ্রামের আবুল খায়ের রশিদ আহম্মেদ (২৪) ও সিলেট নগরের রিকাবিবাজারের সাফিউর রহমান ফারাবী (৩০)। এর মধ্যে আবুল, ফয়সাল ও হারুন পলাতক। বাকিরা কারাগারে আছেন।
সিলেট নগরের সুবিদবাজারের নূরানী আবাসিক এলাকায় ২০১৫ সালের ১২ মে সকালে অনন্ত বিজয় দাশকে (৩২) কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। অনন্ত পূবালী ব্যাংকের জাউয়াবাজার শাখায় ডেভেলপমেন্ট অফিসার ছিলেন। তাঁর লেখা ও সম্পাদিত বিজ্ঞানবিষয়ক বই রয়েছে। সিলেটের বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী কাউন্সিল নামের একটি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি।
এ মামলায় ৩০২ ও ৩৩০ ধারায় অভিযুক্ত করে গত বছরের ২৮ আগস্ট অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছিল। তাতে পাঁচজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। পরে আদালত অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। সম্পূরক অভিযোগপত্রে নতুন করে যুক্ত করা হয়েছে সাফিউর রহমান ফারাবীকে। ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তাঁকে ২০১৫ সালের ২ মার্চ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সিলেট থেকে আটক করে। পরে তাঁকে অনন্ত হত্যা মামলায়ও গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার ও পরে জামিনে মুক্ত হওয়া দৈনিক সংবাদের ফটোসাংবাদিক ইদ্রিস আলীসহ ১০ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অব্যাহতি পাওয়া বাকি নয়জন হলেন কানাইঘাটের ফালজুর গ্রামের মোহাইমিন নোমান, ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার হওয়া মো. সাদেক আলী ওরফে মিঠু, মোহাম্মদ তৌহিদুর রহমান ওরফে গামা, আমিনুল মল্লিক, জাকিরুল্লাহ ওরফে হাসান, মো. আরিফুল ইসলাম ওরফে আহসান, জুলহাস বিশ্বাস, মো. জাফরান হাসান ও আবুল বাসার।
হত্যার এক দিন পর অনন্তের বড় ভাই রত্নেশ্বর দাশ বাদী হয়ে অজ্ঞাত চার দুর্বৃত্তকে আসামি করে হত্যা মামলা করেছিলেন। বিজ্ঞান বিষয়ে লেখালেখির কারণে অনন্তকে ‘উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী’ পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে বলে অভিযোগ করা হয়। পরে মামলার তদন্ত সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়। সিআইডির পরিদর্শক আরমান আলী জানিয়েছেন, মামলাটিতে সন্ত্রাসবিরোধী ধারা যুক্ত করে আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।