প্রাণ গেল পাঁচজনের

নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: যশোর সদর উপজেলার সাতমাইল এলাকায় গাছের সঙ্গে বাসের ধাক্কায় প্রাণ গেল পাঁচজনের। গুরুতর অবস্থায় আরও ৩৩ জনকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

বিকেল চারটা পর্যন্ত নিহত ব্যক্তিদের পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসা কর্মকর্তা কল্লোল কুমার সাহা বলেন, ‘পাঁচজনের লাশ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। গুরুতর অবস্থায় ৩৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এঁদের অধিকাংশের অবস্থায় আশঙ্কাজনক। কয়েকজনকে হয়তো ঢাকায় স্থানান্তর করতে হবে।’
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, আজ দুপুর ১২টার দিকে সাতমাইল এলাকায় একটি বাস আরেকটি বাসকে অতিক্রম করতে গেলে দুর্ঘটনায় পড়ে।
সকাল ১০টার দিকে রুপসা পরিবহনের একটি বাস (নম্বর-যশোর ব-১১-০০৮০) খুলনা থেকে ছেড়ে কুষ্টিয়ার দিয়ে যাচ্ছিল। দ্রুতগতির বাসটি সাতমাইল এলাকায় পৌঁছালে অপর একটি পরিবহনকে অতিক্রম করার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে গাছের সঙ্গে সজোরে আঘাত লাগে। এতে বাসটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই চারজন নিহত হন। দমকল বাহিনীর উদ্ধারকারী দল ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাসের মধ্যে আটকে থাকা আহত যাত্রীদের বের করে হাসপাতালে পাঠায়। উদ্ধারকাজে স্থানীয় বাসিন্দারাও যোগ দেন।
বাসটি রাস্তার ওপরে আড়াআড়ি হয়ে যায়। যে কারণে প্রায় বেলা আড়াইটা পর্যন্ত ব্যস্ততম ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। পরে পুলিশের রেকার ভ্যান ঘটনাস্থলে নিয়ে বাসটি সরিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।
এদিকে হাসপাতালে একের পর এক মুমূর্ষু রোগীবাহী যানবাহন আসতে থাকে। স্বজনদের আর্তনাদ ও শোকে পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।
ওই বাসে থাকা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পেয়ারাখালী গ্রামের বাসিন্দা তুহিনুর রহমান (৪৬) বলেন, ‘কুষ্টিয়া যাওয়ার উদ্দেশ্যে যশোর থেকে রুপসা পরিবহনের ওই বাসে উঠেছিলাম। শুরু থেকেই চালক বাসটি বেপরোয়া গতিতে চালাচ্ছিলেন। বাসের ভেতরে প্রচণ্ড ভিড় ছিল। অন্তত ৫০ জন মানুষ ছিল বাসের ভেতরে। একটি গাড়িতে ওভারটেক করতে গিয়ে দুর্ঘটনাটা ঘটে।’
যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আজমল হুদা বলেন, ‘বেপরোয়া গতিতে যাত্রীবাহী পরিবহনটি খুলনা থেকে কুষ্টিয়া যাচ্ছিল। অপর একটি পরিবহনকে অতিক্রম করার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি রাস্তার পাশের গাছের সঙ্গে আঘাত লাগে। এতে ৫ জন নিহত ও ৩৫ জনের মতো আহত হয়েছেন। বাসের চালক ও সহকারী পালিয়ে গেছেন।’
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ২৩ জনের নাম-ঠিকানা জানা গেছে। তাঁরা হলেন যশোর শহরের শংকরপুর এলাকার সাব্বির, সদর উপজেলার ঘুরুলিয়া গ্রামের নিখিল, আবদুল্লাহপুর গ্রামের ফরিদা, ফতেপুর গ্রামের অরবিন্দু, রাজারহাট গ্রামের শরিফুল, ঝিনাইদহের কাজী ফরিদ, শহিদুল, রাশেদুল, রাহিদ রেজা, তরিকুল ইসলাম, কালীগঞ্জের সোহেল রানা, বারবাজার এলাকার বীথিমণি, ঈশ্বরদী এলাকার আমির, তুহিনুর রহমান, মাগুরার মিনহাজুল, সিরাজুল ইসলাম, কুষ্টিয়ার আংগুরা, আবদুর রহিম, চান্দু, শাহআলম, মুক্তা, সিরাজুল ও দীপ্ত আলম।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ