যে কারণে টিউবওয়েল থেকে বেরোচ্ছে গরম পানি
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: এক দিন বা দুই দিন নয়, প্রায় ৫০ বছর ধরে টিউবওয়েল চাপলেই বেরোচ্ছে গরম পানি। এ ঘটনা ঘটছে কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার ধলা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে সরেজমিনে এলাকা পরিদর্শনে যান কিশোরগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. তোজাম্মেল হক ও সদর উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আবু জাকারিয়া। তাঁরা এসব টিউবওয়েল থেকে পানি সংগ্রহ করে বিভিন্ন যন্ত্রের মাধ্যমে পরীক্ষা করেন।
এই দুই কর্মকর্তা বলেন, পানি পরীক্ষা করে মিথেন গ্যাস পাওয়া যায়। সে জন্য পানিটা টিউবওয়েল থেকে বের হওয়ার পর এক ধরনের গন্ধ হয়। এই পানি সঙ্গে সঙ্গে পান করা ক্ষতিকর। এ ছাড়া প্রতি লিটার পানিতে ১.৫ মিলিগ্রাম ম্যাংগানিজ পাওয়া গেছে। স্বাভাবিক পানিতে এই উপাদান থাকার কথা ০.১ মিলিগ্রাম। পানিতে মাত্রাতিরিক্ত ম্যাংগানিজ থাকার কারণে পানি পিচ্ছিল। পানিতে পিএইচ-এর পরিমাণ পাওয়া গেছে ৯.৮, স্বাভাবিক খাবার পানিতে যার পরিমাণ থাকে ৬.৮ থেকে ৭.৫। এই উপাদান বেশি থাকার কারণে পানি হাতে-পায়ে বা শরীরে লাগলে চুলকায়। এই পানি পানে আলসারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
টিউবওয়েল থেকে সংগ্রহ করা পানি পাশের একটি চায়ের দোকানে বসে বিভিন্ন যন্ত্রের মাধ্যমে পরীক্ষা করছেন দুই কর্মকর্তা। কিশোরগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের দুই কর্মকর্তা জানালেন, স্বাভাবিক পানির তাপমাত্রা থাকে ২৪ থেকে ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে এসব টিউবওয়েলের পানি পরীক্ষা করে তাপমাত্রা পাওয়া গেছে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর এ কারণেই পানি টিউবওয়েল থেকে বের হওয়ার পর অনেকটা ফুটন্ত পানির মতো গরম থাকে।
নির্বাহী প্রকৌশলী মো. তোজাম্মেল হক বলেন, তাঁরা তাৎক্ষণিকভাবে ছোট পরিসরে পানি পরীক্ষা করে গ্যাস, খনিজ, পিএইচ ও তাপমাত্রা অস্বাভাবিক পেয়েছেন। আরও বিভিন্ন পরীক্ষা করার জন্য পানি সংগ্রহ করা হয়েছে। এগুলো পরীক্ষাগারে পাঠানো হবে।
জেলার তাড়াইল উপজেলার ধলা ইউনিয়নের কাওয়াখালী, ভেইয়ারকোনা, সিকদারপাড়া, নয়াপাড়া ও আজবপুর গ্রামের ১০০টিরও বেশি টিউবওয়েল থেকে দীর্ঘদিন ধরে গরম পানি বের হচ্ছে। এ থেকে রেহাই পেতে অনেকের বাড়িতে একটির পরিবর্তে তিনটি পর্যন্ত টিউবওয়েল বসানো হয়েছে। তবু পানির কোনো পরিবর্তন নেই।