আপন জুয়েলার্সের সব মালিককে তলব
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: রাজধানীতে আপন জুয়েলার্সের পাঁচটি বিক্রয়কেন্দ্র অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ সোনা ও হীরা আটকের ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির সব মালিককে তলব করেছে শুল্ক গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ।
আজ সোমবার শুল্ক গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ জানায়, গতকাল রোববার আপন জুয়েলার্সের গুলশান, উত্তরা, মৌচাক ও সীমান্ত স্কয়ারের পাঁচটি বিক্রয়কেন্দ্র থেকে সোনা ও হীরা আটক করা হয়। এগুলো ব্যাখ্যাহীনভাবে মজুত রাখা ছিল। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা জানার জন্য দিলদার আহমেদসহ আপন জুয়েলার্সের সব মালিককে তলব করা হয়েছে। ১৭ মে বেলা ১১টায় শুল্ক গোয়েন্দার কাকরাইল সদর দপ্তরে তাঁদের হাজির হতে বলা হয়েছে।
গতকাল আপন জুয়েলার্সে অভিযান চালিয়ে ২৮৬ কেজি সোনা ও ৬১ গ্রাম হীরা ব্যাখ্যাহীনভাবে মজুত রাখার দায়ে সাময়িক আটক করেন শুল্ক গোয়েন্দারা। এসবের মূল্য ৮৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। এগুলো সিলগালা করে আইন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটির হেফাজতে দেওয়া হয়েছে। এসব মূল্যবান সামগ্রী সরবরাহের বৈধতা নিয়ে মালিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
আপন জুয়েলার্সের অন্যতম মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে শাফাত আহমেদ রাজধানীর বনানীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি। তাঁকে ও তাঁর বন্ধু রেগনাম গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ হোসেন জনির ছেলে সাদমান সাকিফকে সিলেট থেকে গত বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। এ মামলার অন্য তিন আসামি ইমেকার্স ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ফার্মের স্বত্বাধিকারী নাঈম আশরাফ, শাফাত আহমেদের গাড়িচালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী আবুল কালাম আজাদ এখনো পলাতক।
দুই ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হওয়ার ঘটনা ধামাচাপা দিতে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ ও তাঁর ছেলে শাফাত আহমেদের বিপুল অর্থ খরচের তথ্য গণমাধ্যমে আসার পর শুল্ক গোয়েন্দারা বিষয়টি খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নেন।
গত ২৮ মার্চ দ্য রেইনট্রি হোটেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে ৬ মে বনানী থানায় মামলা হয়। আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে দুই ছাত্রী জানান, গত ২৮ মার্চ বনানীর ‘দ্য রেইনট্রি’ হোটেলে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিয়ে তাঁদের নেওয়া হয়। শাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী তাঁদের বনানীর ২৭ নম্বর রোডের দ্য রেইনট্রি হোটেলে নিয়ে যান। হোটেলে যাওয়ার আগে দুজনই জানতেন না সেখানে পার্টি হবে। এ সময় তাঁদের সঙ্গে শাহরিয়ার নামের এক বন্ধু ছিলেন। তাঁদের বলা হয়েছিল, এটা একটা বড় অনুষ্ঠান, অনেক লোকজন থাকবে। হোটেলে যাওয়ার পর শাফাত ও নাঈমের সঙ্গে তাঁরা আরও দুই তরুণীকে দেখেন। পরিবেশ ভালো না লাগায় শাহরিয়ারসহ দুই তরুণী চলে আসতে চেয়েছিলেন। তখন আসামিরা শাহরিয়ারের কাছ থেকে গাড়ির চাবি নিয়ে নেন এবং তাঁকে মারধর করেন। এরপর দুই তরুণীকে অস্ত্রের মুখে একটি কক্ষে নিয়ে যান। ধর্ষণ করার সময় শাফাত গাড়িচালককে ভিডিও চিত্র ধারণ করতে বলেন। আর নাঈম তাঁদের মারধর করেন। তাঁরা এ ঘটনা জানিয়ে দেবেন বলে জানানোর পর শাফাত তাঁর দেহরক্ষীকে ওই দুই তরুণীর বাসায় তথ্য সংগ্রহের জন্য পাঠান। লোকলজ্জার ভয়ে এবং মানসিকভাবে তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেন আসামিরা। তাঁদের কথামতো না চললে বা এ ঘটনা কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়।