স্ত্রীকে জীবন্ত পুঁতে ফেলার চেষ্টা
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: শোয়ার ঘরের মেঝেতে গর্ত খুঁড়ে অচেতন কিশোরী স্ত্রীকে জীবন্ত পুঁতে ফেলার চেষ্টা করছিলেন সাদ্দাম হোসেন (২৫) নামের এক ভটভটিচালক। তখন বাড়িতে ক্ষুদ্রঋণের কিস্তির টাকা সংগ্রহ করতে আসা এনজিওকর্মীরা বিষয়টি দেখে গ্রামবাসীকে খবর দিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার ও সাদ্দামকে আটক করেন।
গত মঙ্গলবার বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার উত্তর কৃষ্টপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গতকাল বুধবার শিবগঞ্জ থানায় মামলা হয়েছে। উদ্ধারের পর মেয়েটিকে শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
গ্রামবাসী ও পুলিশ বলেছে, প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে সাদ্দামের সঙ্গে মেয়েটির বিয়ে হয়। তখন মেয়েটি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই নির্যাতন শুরু করেন সাদ্দাম, যৌতুকও দাবি করেন। মেয়েটির গরিব বাবা-মা বেশ কয়েকবার জামাতার টাকার দাবি পরিশোধ করেন। কিন্তু কয়েক দিন আগে সাদ্দাম এক লাখ টাকা দাবি করলে মেয়েটি বাবা-মায়ের কাছে তা চাইতে অস্বীকৃতি জানায়। এ নিয়ে সাদ্দাম অশান্তি শুরু করেন। মঙ্গলবার কিশোরী স্ত্রীকে মারধর করে অজ্ঞান করে ফেলেন সাদ্দাম। এরপর শোয়ার ঘরের মেঝেতে গর্ত খুঁড়ে তাতে অচেতন স্ত্রীকে ফেলে গর্তে মাটিচাপা দিতে শুরু করেন। তখনই সেখানে ঋণের কিস্তির টাকা আদায়ে তিন-চারজন এনজিওকর্মী যান। মেয়েটি ওই এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছিল। এনজিওকর্মীরা অনেক ডাকাডাকি করে কারও সাড়া না পেয়ে ধারণা করেন, কিস্তি এড়াতে বাড়ির লোকজন ঘরে লুকিয়েছে। বিষয়টি দেখতে তাঁরা ঘরের টিনের বেড়ার ফাঁক দিয়ে উঁকি দিলে মাটিচাপা দেওয়া অবস্থায় মেয়েটিকে দেখতে পেয়ে গ্রামবাসীকে খবর দেন। পরে সবাই এসে মেয়েটিকে উদ্ধার করেন এবং সাদ্দামকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন মেয়েটি বলে, বিয়ের পর থেকেই স্বামী তাকে অপছন্দ করা শুরু করেন। যৌতুক দাবি করেন। মঙ্গলবার সকালে মারধরের একপর্যায়ে সাদ্দাম তার মাথায় আঘাত করলে সে অজ্ঞান হয়ে যায়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার পর জ্ঞান ফেরে। তাই মারধর করার পর কখন কী হয়েছে, তার কিছু মনে নেই।
সাদ্দাম থানা হেফাজতে থাকার সময় ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, মেয়েটি তাঁর কথা শুনত না। তাই ‘ভয় দেখাতে’ মাটিচাপা দেওয়া হচ্ছিল।
এ ঘটনায় মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে সাদ্দাম ও তাঁর মা জোসনা বেগমকে আসামি করে শিবগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন। শিবগঞ্জ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) জাহিদ হোসেন বলেন, প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। সাদ্দামকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অপর আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।