চাপে পড়ে ভাস্কর্য সরাচ্ছি: মৃণাল হক
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: চাপের মুখে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণের ভাস্কর্য অপসারণের কথা জানিয়েছেন এর ভাস্কর মৃণাল হক।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ভাস্কর্যটি যখন সরানোর কাজ চলছিল সে সময় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান ফটকের কাছে এসে বাইরে অপেক্ষারত সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি।
মৃণাল হক বলেন, “উপরের প্রেসারে ভাস্কর্যটি সরাতে হচ্ছে। আমাকে বলা হয়েছে সরাতে, চাপ দেওয়া হয়েছে।”
কে বা কারা চাপ দিয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “অনেকের অনেক রকম ক্ষমতা আছে। আমি বানিয়েছিলাম, আমাকে সরাতে বাধ্য করা হচ্ছে।
“আমি মাপ চাইছি। আমার হাত-পা বাঁধা।”
ভাস্কর্যটি এনেক্স ভবনের সামনে পুনঃস্থাপন করা হতে পারে বলে জানান তিনি।
ভাস্কর্য অপসারণে তার উপস্থিতির কারণ জানতে চাইলে ভাস্কর মৃণাল বলেন, “অন্য কেউ সরাতে গেলে ভেঙে যেতে পারে, নষ্ট হতে পারে সেজন্য এসেছি।”
রোমান যুগের ন্যায়বিচারের প্রতীক ‘লেডি জাস্টিস’র আদলে একটি ভাস্কর্য কয়েক মাস আগে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে স্থাপন করা হয়।
এরপর থেকে হেফাজতে ইসলামসহ কয়েকটি ইসলামী সংগঠন তার বিরোধিতায় নামে। হেফাজত এই ভাস্কর্য সরানোর দাবি জানিয়ে সরকারকে ৫ মে মতিঝিলে ফের সমাবেশের হুমকি দেয়। ওলামা লীগও তা অপসারণের দাবি জানায়।
গত ১১ এপ্রিল হেফাজতের আমির শাহ আহমদ শফী নেতৃত্বাধীন একদল ওলামার সঙ্গে গণভবনে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাস্কর্যটি সরাতে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
মৃণাল হক বলছেন, এটা গ্রিক দেবী নয়, শাড়ি-চুড়ি পরানো বাঙালি নারীর অবয়ব।
“এটা কোনো গ্রিক দেবীর মূর্তি নয় বরং বাঙালি নারীর ভাস্কর্য। ন্যায় বিচারকের ভূমিকায় বাঙালি নারীর অবয়ব দেখাতে চেয়েছি এই ভাস্কর্যে। বিশ্বজুড়ে বিচারালয়ে ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে একটি ভাস্কর্য প্রচলিত আছে।”
ভাস্কর্য অপসারণের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, কারও সন্তান হারালে যেমন লাগে তারও তেমন লাগছে।
এর আগে কয়েকটি ইসলামি দলের দাবির মুখে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে বিমানবন্দরের সামনে থেকে লালনের ভাস্কর্য অপসারণের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, এরপর হয়তো অপরাজেয় বাংলা, রাজু ভাস্কর্য ও শেরাটনের সামনের ঘোড়ার গাড়ির ভাস্কর্য সরানোর নির্দেশ আসবে।