রামপালের ড্রেজিংয়ে হুমকিতে পড়বে জলজ প্রাণী
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা পরিবহনের জন্য গভীর চ্যানেল তৈরি করতে ৩৩ মিলিয়ন টন পলি-কাদা বঙ্গোপসাগর ও পশুর নদী থেকে ড্রেজিং করা হবে। আর এই ড্রেজিংয়ের ফলে সেখানকার মাছসহ জলজ প্রাণীদের বৃদ্ধি ও বেঁচে থাকা হুমকিতে পড়বে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হবে ছোট মাছ ও ছোট প্রাণীগুলো। ফলে এরা দ্রুত বিলুপ্ত হবে।
দুই বিদেশি বিজ্ঞানীর এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। আজ শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচার থিয়েটার ভবনে ‘রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহার্য কয়লা পরিবহন ও নদী ড্রেজিং পরিকল্পনার পরিবেশগত প্রভাব’ শীর্ষক মূল্যায়ন প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)। মূল্যায়ন গবেষণাটি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের মন্টানা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইলিয়াম ক্লায়েন্ডল ও অস্ট্রেলিয়ার জন ব্রুডি। অনুষ্ঠানে প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞ আনোয়ার হোসেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ড্রেজিং ও ডাম্পিংয়ের প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি হবে। পর্যায়ক্রমে পলি-কাদা পার্শ্ববর্তী ‘ইকোসিস্টেমে’ ছড়িয়ে পড়বে। এভাবে পানিতে ভাসমান পলির পরিমাণ (ঘোলাত্ব) বাড়িয়ে দেবে। মাছসহ জলজ প্রাণীদের কানকো, ফুলকা, নাকের ছিদ্রসহ বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ঘোলা পানির কাদা দিয়ে বন্ধ (ক্লোগিং) হয়ে যাবে। এতে জলজ জীবন বিপন্ন হবে।
সরকার বঙ্গোপসাগর ও পশুর নদীতে ড্রেজিংয়ের ফলে সৃষ্ট পরিবেশের ওপর হুমকিগুলো পর্যাপ্তভাবে মূল্যায়ন করেনি বলে প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়। এই হুমকিগুলো নিরসন ও কমানোরও পর্যাপ্ত পরিকল্পনা নেই। ড্রেজিং করা ও পলি-কাদার বর্জ্য (ডিজপোজাল) সুন্দরবনের খাড়ি ও বঙ্গোপসাগরের পানি ঘোলা করবে। ফলে আলো প্রবেশ করবে না এবং খাদ্যচক্রের ভিত্তি ‘ফাইটোপ্লাঙ্কটন’ জন্মাতে বাধা সৃষ্টি করবে। ডাম্পিং করা পলি-কাদা ও ঘোলা পানি জলের তলদেশে বাস করা জলজ প্রাণীদের বৃদ্ধি ও বেঁচে থাকাকে হুমকিতে ফেলবে। ড্রেজিংয়ের ফলে শব্দদূষণ ও রাতে আলো দূষণ জলজ বন্য জীবনকে বিশৃঙ্খল করবে। ফলে প্রাণীরা ওই এলাকা এড়িয়ে চলবে এবং খাদ্য সংগ্রহের জায়গা কমে যাবে।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন, অধ্যাপক এম এম আকাশ, বদরুল ইমাম, বাপার সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন প্রমুখ।