কারওয়ান বাজার পেরোলেই সবজির দাম দ্বিগুণ

নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: রাজধানীর কারওয়ান বাজারে এক কেজি পটল পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ১৬-১৮ টাকা। খুচরা তা ২০ টাকা। সেখান থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরে কাঁঠালবাগান বাজারে সেই পটলের দাম রাখা হচ্ছে কেজিপ্রতি ৪০ টাকা। একই চিত্র দেখা গেল হাতিরপুল বাজারেও। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে রাজধানীর বাজারগুলোতে বিভিন্ন পণ্যের মূল্যতালিকা টাঙিয়ে দেওয়া হলেও তা মানছেন না কেউই।

আজ শুক্রবার সকালে ঢাকার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, বিক্রেতারা ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন সবজির দাম নিজেদের মতো করে হাঁকছেন। অধিকাংশ সবজির দামই কারওয়ান বাজারের চেয়ে কাঁঠালবাগান ও হাতিরপুল বাজারে দেড় থেকে দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি ঝিঙা ৩৫ টাকা, করলা ৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৩৫ টাকা, বরবটি ৩০ টাকা, পেঁপে ২৫ টাকা, বেগুন ৬০-৭০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৪০ টাকা, টমেটো ৫০ টাকা, শসা ২০-২৫ টাকা ও লেবু প্রতি হালি ১০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

অথচ অন্য বাজারে গেলেই এই সব পণ্যের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে। কাঁঠালবাগান বাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি কেজি ঝিঙা ৫০ টাকা, করলা ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, বেগুন ৮০-১০০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা, টমেটো ৬০ টাকা, শসা ৪০ টাকা ও লেবু প্রতি হালি ১৫ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। হাতিরপুল বাজারের চিত্রও প্রায় একই রকম।

বিভিন্ন সবজির দাম কারওয়ান বাজারের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ রাখা হচ্ছে কেন—জানতে চাইলে কাঁঠালবাগান বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. ফয়সাল বলেন, দোকান ভাড়া ও পরিবহন খরচ বেশি। তা ছাড়া যে সব সবজি কেনা হয়, বৃষ্টির কারণে তার অনেকটাই নষ্ট হয়ে যায়। তাই খরচ পুষিয়ে নিতে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

বাজারে আলু, পেঁয়াজ ও আদার দাম মোটামুটি স্থিতিশীল রয়েছে। তবে রসুনের দাম গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে প্রায় ১০০ টাকা কমেছে। গরু, মহিষ ও খাসির মাংস নির্ধারিত দামেই বিক্রি হচ্ছে। বয়লার মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা। বেশির ভাগ মাছের দাম আগের জায়গায় থাকলেও, বড় ইলিশের দাম হালিপ্রতি বেড়ে গেছে ৬০০-৮০০ টাকা। মসলার বাজারে এখনো মূল্য বৃদ্ধির ঢেউ না লাগলেও, দু-তিন দিনের মধ্যে কিছুটা বাড়তে পারে বলে জানান কারওয়ান বাজারের মসলা ব্যবসায়ী মো. বাবু।

মূল্যহীন মূল্যতালিকা
সিটি করপোরেশন রাজধানীর বাজারগুলোতে বিভিন্ন পণ্যের মূল্যতালিকা টাঙিয়ে রাখলেও সেটি কেউই মানছেন না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাতিরপুল বাজারের ব্যবসায়ী মোতালেব হোসেন বলেন, ‘ওই তালিকা মানলে আর ব্যবসা করতে পারুম না। ওই খানে যে দাম লেখা থাকে, তার বেশি দামে মাল কিনতে হয়। লস দেয়ার জন্য তো আর দোকান খুলিনি। একদিন মেয়র আইছিল, দাম বেশি বলে সেদিন আমরা কেউ বেগুন আনিনি।’

ক্রেতাদের সুবিধার জন্য মূল্যতালিকার বোর্ড দৃশ্যমান স্থানে টাঙানো হলেও, হাতিরপুল বাজারে সেই বোর্ডের সামনেই দোকান বসিয়েছে একজন। এতে ঢাকা পড়ে গেছে বোর্ডের কিছু অংশ। মূল্যতালিকা ঢেকে দোকান বসানোর বিষয়ে জানতে চাইলে দোকানি বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘এইখানে কেউ তালিকা দেখে বাজার করে না। ওই দামে কিছু বিক্রিও হয় না।’
হাতিরপুলে বাজার করতে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সরকারি কর্মকর্তা বলেন, ‘সিটি করপোরেশন তো তালিকা টাঙিয়েই দায় সেরেছে। নিয়মিত তদারকি না করলে এটা কোনো কাজে আসবে না। এখন বাজার করতে এসে তো আর না কিনে ফিরে যেতে পারি না। তাই তারা যে দাম চায়, সেই দামেই কিনতে হয়।’

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ