দুই দেশের সম্পর্কে নতুন দ্বার খুলেছে
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী স্তেফান লোফভেন মনে করছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুইডেনে দ্বিপক্ষীয় সরকারি সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের সম্পর্কে নতুন দ্বার খুলেছে।
সুইডিশ প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে তিন দিনের সরকারি সফরে বুধবার রাতে স্টকহোমে পৌঁছান শেখ হাসিনা। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের কোনো প্রধানমন্ত্রীর সুইডেনে এটিই প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর।
গতকাল বৃহস্পতিবার সুইডেনের পার্লামেন্ট পরিদর্শনের পর দেশটির রাজার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন শেখ হাসিনা। পরে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক ও প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বিফিং করেন।
বিফিংয়ে পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক জানান, ‘সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সফরকে বলেছেন, ইট ওপেনস এ নেক্সট ফেইস অব আওয়ার রিলেশন্স (এটা দীর্ঘমেয়াদি ও গভীর সম্পর্কের দ্বার উন্মোচিত করল)।’
পররাষ্ট্র সচিব জানান, সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী সহযোগিতার কয়েকটি খাত চিহ্নিত করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে- জ্বালানি, প্রযুক্তি খাত ও বাণিজ্য। কীভাবে বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তায় সুইডেন সহায়তা করতে পারে সে ব্যাপারে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বিস্তারিত আলাপ হয়েছে। সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশকে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানান সচিব।
বাণিজ্যের ক্ষেত্র নিয়ে অনেক আলাপ হয়েছে। এ ক্ষেত্রে অনেক বিস্তৃত হওয়ার সুযোগ আছে বলে মনে করেন সুইডিশ প্রধানমন্ত্রী। দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের শুরুতেই ১৯৭১ সালে স্বাধীনের দুই মাসের মধ্যেই বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি দেয়া ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম দেশ সুইডেনকে ধন্যবাদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এরপর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, পোশাক শিল্প খাতের উন্নয়ন, বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠাসহ নানা বিষয় তুলে ধরেছেন শেখ হাসিনা। এদিকে পার্লামেন্ট পরিদর্শনের পর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে সুইডেনের রাজপ্রাসাদে নিয়ে নিয়ে যাওয়া হলে রাজা কার্ল ষষ্ঠদশ গুস্তাভ তাকে স্বাগত জানান।
পরে সুইডিশ রাজার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সৌজন্য বৈঠক হয়। বৈঠক সম্পর্কে পররাষ্ট্র সচিব জানান, সুইডিশ রাজা বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রক্রিয়া নিয়ে খুবই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। একইসঙ্গে সুইডেন বাংলাদেশে শুধু বিনিয়োগ নয়, উন্নয়নেও সহযোগিতা করবে বলেও জানান সুইডিশ রাজা।
এদিকে গতকাল বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার হোটেলে দেখা করতে আসেন সুইডেনের বিচার ও অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রী মর্গান জোহানসন। এ সময় বৈধভাবে সুইডেনে আরও বাংলাদেশি জনশক্তি রপ্তানির ব্যাপারে শেখ হাসিনা ও জোহানসনের মধ্যে কথা হয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব।
গতকাল সন্ধ্যায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের আয়োজিত এক সংবর্ধনায় যোগ দেন শেখ হাসিনা। সফর শেষে আজ শুক্রবার স্টকহোম ত্যাগ করে লন্ডন হয়ে আগামীকাল শনিবার ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।