চালের শুল্ক কমিয়ে ১০% করা হলো

নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: সংকট কাটাতে অবশেষে চালের আমদানি শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। চলমান আমদানি শুল্ক ২৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ সচিবালয়ে ‘প্রতিযোগিতা আইন-২০১২’ বিষয়ক অবহিতকরণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী শুল্ক কমানোর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার কথা চিন্তা করে এখন থেকে ১০ শতাংশ আমদানি শুল্ক দিয়ে চাল আমদানি করা যাবে। এতে করে চলমান বাজারমূল্য দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

আগে বাজারপ্রতি ১০ ভাগ আমদানি শুল্কের পাশাপাশি কৃষকদের অধিকার নিশ্চিত করতে ১৫ ভাগ রেগুলেটরি ডিউটি (আরডি) এবং ৩ ভাগ সম্পূরক শুল্কসহ মোট ২৮ ভাগ শুল্ক দিতে হতো এ কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘বাজারে পণ্যের মূল্য ইচ্ছাকৃত বৃদ্ধির চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে পণ্যমূল্য স্বাভাবিক রয়েছে। স্থায়ীভাবে পণ্যের বাজার স্বাভাবিক রাখতে সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।’

এর আগে গত সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যবসায়ীদের চাল আমদানিতে বিনা মার্জিনে ঋণপত্র খোলার সুযোগ দেওয়ার ঘোষণা দেয়। ক্রমাগত দাম বৃদ্ধির মুখে সরকারের চালের মজুতও তলানিতে পৌঁছে যাওয়ায় সম্ভাব্য সংকট মোকাবিলায় শুল্ক কমানো ও বিনা মার্জিনে ঋণপত্র খোলার সুযোগ দেওয়া হয়। সোমবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে চিঠি পাঠিয়ে জানায়, ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চাল আমদানির এলসি খুলতে ব্যাংকগুলো কোনো ‘মার্জিন’ ধার্য করতে পারবে না।

অর্থাৎ চাল আমদানির জন্য এলসি (ঋণপত্র) খোলার সময় ব্যবসায়ীদের অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা থাকতে হবে না। তাঁরা বাকিতে চাল আমদানি করতে পারবেন এবং চাল দেশে আসার পর ব্যাংকের ঋণ শোধ করতে পারবেন।

হাওরাঞ্চলে বন্যা, দেশের বিভিন্ন এলাকায় অতিবৃষ্টিসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে চালের স্বাভাবিক সরবরাহে বিঘ্ন ঘটায় চালের বাজারে অস্থিতিশীলতা নিরসনে এ উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে চিঠিতে।

এর আগে গত দুই মাসে বাজারে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে ৮ থেকে ১০ টাকা বেড়ে যায়। সরকারি গুদামে যেখানে চালের মজুত থাকার কথা ৮ থেকে ১০ লাখ টন, সেখানে আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত মজুত দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৮১ হাজার টনে। মন্ত্রণালয়ের হিসেবে মোটা চালের দর ৪৮ টাকা হয়েছে। চালের অভাবে খাদ্য মন্ত্রণালয় বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে চাল সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) চাল আমদানিতে এলসি খোলার পরিমাণ কমেছে ৫৪ দশমিক ১০ শতাংশ। আর এলসি নিষ্পত্তির পরিমাণ কমেছে প্রায় ৬৩ শতাংশ।

এ পরিস্থিতিতে বাজারে চালের দাম ক্রমাগত বাড়তে থাকায় সরকারিভাবে মোট ছয় লাখ টন চাল আমদানির পরিকল্পনা করা হয়। পরে সরকারিভাবে ভিয়েতনাম থেকে আরও আড়াই লাখ টন আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন পায়। এর মধ্যে প্রথম দেড় লাখ টনের দরপত্র দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার আরও ৫০ লাখ টন চাল আমদানির দরপত্র চাওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ