রামপাল প্রকল্প করলে সরকার আলট্রা সুপারভাবে অপমানিত হবে

নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: দেশের ও বিশ্ব জনমতকে অগ্রাহ্য করে সরকার রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রকল্পটির কারণে সুন্দরবন ধ্বংস হবে—এটা জেনেও তারা বলছে, আমরা আলট্রা সুপার প্রযুক্তি ব্যবহার করব, এতে সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হবে না। দেশ-বিদেশের গবেষকেরা বিজ্ঞানসম্মত যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করেছেন, এই প্রকল্প হলে সুন্দরবন ধ্বংস হবে। এরপরও যদি প্রকল্পটি হয়, তাহলে বাংলাদেশ বিশ্ববাসীর কাছে আলট্রা সুপারভাবে অপমানিত হবে।

আজ রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিক ও লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ এসব কথা বলেছেন। জাতিসংঘের বিজ্ঞান, শিক্ষা ও ঐতিহ্যবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্য কেন্দ্রের ৪১তম অধিবেশন উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্য দেন তিনি।

গতকাল শনিবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া এই অধিবেশন চলবে ১২ জুলাই পর্যন্ত। সেখানে সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় যুক্ত করা হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি ও বাপা তাদের ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বাপার সহসভাপতি ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, ‘আমরা চাই, বাংলাদেশের গর্ব সুন্দরবনকে যাতে ইউনেসকো বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকা থেকে বাদ না দেয়। তবে এর জন্য সরকারকে রামপাল প্রকল্প বাতিল করতে হবে। এই প্রকল্পের কারণে কী ক্ষতি হবে, সে বিষয়ে এ পর্যন্ত ১২টি দেশি-বিদেশি গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু সরকার তা আমলে নেয়নি। এই প্রকল্প হবে সুন্দরবনের কফিনে শেষ পেরেক।

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, ‘আমরা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরুদ্ধে না। আমরা সুন্দরবনের পাশ থেকে রামপাল প্রকল্প সরিয়ে নেওয়ার পক্ষে। আমরা মোট তিনটি বিকল্প স্থানে রামপাল প্রকল্প করার ব্যাপারে সরকারকে সুনির্দিষ্ট পরামর্শ দিয়েছি। কিন্তু সরকার তা আমলে নেয়নি।’ সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘এখনো খেলা শেষ হয়ে যায়নি। সময় আছে। প্রকল্পটি বাতিল করে সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়া বন্ধ করুন।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক বদরুল ইমাম বলেন, ‘কোনো এক অজানা শক্তির প্ররোচনায় সরকার রামপাল প্রকল্প করে সুন্দরবনের ক্ষতি করছে, তা আমাদের জানতে হবে।’

বাপা সাধারণ সম্পাদক ডা. আবদুল মতিন বলেন, সরকারের একজন জ্যেষ্ঠ সচিব বিভিন্ন জায়গায় বক্তৃতা দিয়ে বলে বেড়াচ্ছেন, যারা রামপাল নিয়ে আন্দোলন করছে, তাদের সঙ্গে উন্মুক্ত বিতর্ক চান। কিন্তু এ পর্যন্ত রামপাল প্রকল্প নিয়ে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি ১২টা গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সরকার থেকে এখন পর্যন্ত তার কোন জবাব দেওয়া হয়নি। সরকারের উচ্ছেদে দেশের যেকোনো স্থানে উন্মুক্ত বিতর্ক করার জন্য চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন ডা. আবদুল মতিন।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ