ষোড়শ সংশোধনী বাতিল জরুরি ছিল: শাহদীন মালিক
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ন্যস্ত করে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে আপিল বিভাগের রায় প্রত্যাশিত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক। রায়ের পর আজ তিনি এ কথা বলেন।
শাহদীন মালিক বলেন, ‘আপিল বিভাগের এ রায় প্রত্যাশিত ছিল। কেননা, ১০ জন অ্যামিকাস কিউরি, অর্থাৎ দেশের ১০ জন বরেণ্য আইনজীবীর মধ্যে নয়জনই মতামত দিয়েছিলেন যে হাইকোর্টের রায় সঠিক ছিল। সেই কারণে আমার প্রত্যাশা ছিল হাইকোর্টের রায় বহাল থাকবে। আর আপিল বিভাগের সাতজন মাননীয় বিচারপতি সর্বসম্মতিক্রমে হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছেন। ক্ষমতার পৃথক্করণের যে নীতি সংবিধান ধারণ করে, অর্থাৎ রাষ্ট্রের তিন অঙ্গ নির্বাহী বিভাগ, আইন বিভাগ ও বিচার বিভাগের কেউ কারও ওপর সরাসরি কর্তৃত্ব করবে না। ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে সেই নীতি লঙ্ঘিত হচ্ছিল। অতএব বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও পৃথক্করণের স্বার্থে এই সংশোধনী বাতিল করা জরুরি ছিল।’
বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী পাস হয়। ২২ সেপ্টেম্বর তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়। ওই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একই বছরের ৫ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের নয় আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত বছরের ৫ মে হাইকোর্টের তিন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলের ওপর চলতি বছরের ৮ মে শুনানি শুরু হয়, যা ১ জুন শেষ হয়।
এর আগে গত ৭ মার্চ আপিল বিভাগ শুনানিতে জ্যেষ্ঠ ১২ আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি (আইনি সহায়তাকারী) হিসেবে নিয়োগ দেন, যাঁদের মধ্যে ১০ জন আদালতে মতামত উপস্থাপন করেন। এঁদের মধ্যে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী টি এইচ খান, ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, আবদুল ওয়াদুদ ভুইয়া, ফিদা এম কামাল, ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, এ এফ হাসান আরিফ, এ জে মোহাম্মদ আলী ও এম আই ফারুকী ষোড়শ সংশোধনীর বিপক্ষে মত দেন। অপর অ্যামিকাস কিউরি আজমালুল হোসেন কিউসি সংশোধনীর পক্ষে মত দেন। অপর দুজন মত উপস্থাপন করেননি।