এই ৬১ যেন ৬২ না হয়: ত্রাণমন্ত্রী
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া সিলেটে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলীদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। একই সঙ্গে তাঁদের হুঁশিয়ার করে বলেছেন, ‘আপনারা সঠিক সময়ে সঠিক কাজ করেন না। করলে আজ এ অবস্থা হতো না। যে কারণে আপনাদের ৬১ জন কর্মকর্তার নামে মামলা হয়েছে। সবাই ভালো হয়ে যান। এই ৬১ যেন ৬২ কিংবা তার বেশি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। সরকার এসব কাজে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছে।’
ত্রাণমন্ত্রী আজ মঙ্গলবার মৌলভীবাজারের বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করে সিলেট এসে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সভায় উপস্থিত পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) প্রকৌশলীদের উদ্দেশে তিনি হাওরে বাঁধ ভেঙে ফসলডুবির ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনের করা মামলার প্রসঙ্গ তুলে ধরে এসব কথা বলেন।
সুনামগঞ্জের ১৫৪টি হাওরে পাউবোর ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৬১২ হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ঘটনায় গত রোববার দুদক পাউবোর পাঁচজন প্রকৌশলীসহ ৬১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। ৬১ আসামির মধ্যে পাঁচজন পাউবো প্রকৌশলী, ১৫ কর্মকর্তা এবং বাঁধের কাজের ৪৬ জন ঠিকাদার। দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলা করার পর দুদক পাউবোর সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আফছার উদ্দীন ও এক ঠিকাদারকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।
সভায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব শাহ্ কামাল, সিলেট বিভাগীয় কমিশনার নাজামানারা খানুম, জেলা প্রশাসক মো. রাহাত আনোয়ার, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান এবং পুলিশ প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থা, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের প্রতিনিধিসহ সিলেটের ১৩ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির এই বিশেষ সভায় মন্ত্রীর কাছে ভিজিএফ কার্ডের বরাদ্দ বাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, সিলেটে ৫৫ হাজার ভিজিএফ কার্ডধারীদের মাসিক নগদ টাকা ও চাল বিতরণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আরও বাড়ানোর বিষয়টি ঢাকায় গিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি বলেন, সিলেট জেলার বন্যাদুর্গত মানুষের জন্য আজ আরও ৫০০ মেট্রিক টন চাল ও ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এর আগে ৫০০ মেট্রিক টন চাল ও ২৪ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
এই ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে যেন কোনো নয়-ছয় না হয়—এ বিষয়ে হুঁশিয়ার করে মন্ত্রী বলেন, ‘ত্রাণ নিয়ে কোনো ছিনিমিনি নয়। ত্রাণসামগ্রী যেন সঠিক জায়গায় যায়, সে বিষয়ে নজর রাখতে হবে। সে জন্য মাঠপর্যায়ে কাজ করতে হবে।’