আশুলিয়ায় দুই পোশাকশ্রমিকের লাশ
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: ঢাকার আশুলিয়ায় দুই পোশাকশ্রমিকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার সকাল ও গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে মাত্র ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত দুজন হলেন টাঙ্গাইলের ঘাটাইলের লাভলু মিয়ার স্ত্রী মাহফুজা বেগম (৩১) ও জামালপুর সদর উপজেলার মাছিমপুর গ্রামের তৈমুদ্দিনের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৩০)। মাহফুজা ও জাহাঙ্গীর আশুলিয়ায় পোশাকশ্রমিকের কাজ করতেন।
আশুলিয়া থানা-পুলিশ ও মাহফুজার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ছয় মাস আগে মাহফুজা ও তাঁর স্বামী লাভলু কাজের খোঁজে আশুলিয়া আসেন। জামগড়া এলাকার একটি বাসায় তাঁরা ভাড়া থাকতেন। মাহফুজা একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। লাভলু মাঝেমধ্যে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ লেগে থাকত। এর জের ধরেই মাহফুজাকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।
মাহফুজার ভাড়া বাসার বাড়ির মালিক এনায়েত মোল্লা বলেন, গত বুধবার রাত ১২টার দিকে তিনি লাভলুকে বাসায় ফিরতে দেখেন। গতকাল সকালে ঘুম থেকে উঠে তাঁদের ঘরে তালা ঝুলতে দেখেন। ওই দিন রাত আটটা পর্যন্ত তাঁদের কেউ বাসায় না ফেরায় তাঁর সন্দেহ হয়। এরপর তিনি তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে খাটের ওপর মাহফুজার গলা কাটা লাশ দেখে আশুলিয়া থানার পুলিশকে জানান। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
মাহফুজার মা হাফিজা বেগম বলেন, দাম্পত্য কলহের জের ধরে জামাতাই তাঁর মেয়েকে হত্যা করেছেন। এ ব্যাপারে তিনি আজ আশুলিয়া থানায় হত্যা মামলা করেছেন।
আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অহিদ মিয়া বলেন, মাহফুজাকে গলা কেটে হত্যার পর তাঁর লাশ তোশক দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছিল। তাঁর স্বামী লাভলু পলাতক।
আজ সকাল নয়টার দিকে আশুলিয়ার নবীনগর এলাকায় গল্ফ ক্লাবের সামনে থেমে থাকা ‘আশুলিয়া ক্ল্যাসিক’ নামের একটি বাস থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় জাহাঙ্গীর আলমের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
আশুলিয়া থানার এসআই নাহিদ হাসান বলেন, জাহাঙ্গীর আশুলিয়ার শ্রীপুর এলাকায় থেকে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। পূর্বশত্রুতার জেরে তাঁকে হত্যা করা হতে পারে।
তবে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, ডাকাতের একটি দল ওই বাস দিয়ে রাতে বিভিন্ন এলাকা থেকে যাত্রী তুলে তাঁদের মালামাল ও নগদ অর্থ লুটে নেয়। জাহাঙ্গীর এর প্রতিবাদ করায় তাঁকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল আউয়াল বলেন, জাহাঙ্গীরকে হত্যার আগে ওই বাস দিয়ে ডাকাতি করা হয়েছে কি না, এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। জাহাঙ্গীরের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে।